বাংলাহান্ট ডেস্ক: এই মুহূর্তে বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলির মধ্যে অন্যতম স্টার জলসার ‘দেশের মাটি’ (desher mati)। কিছুদিনের মধ্যেই টিআরপি তালিকায় নিজের স্থান পাকা করে ফেলেছে এই সিরিয়াল। নোয়া কিয়ানের জুটি দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। পাশাপাশি যৌথ পরিবার নিয়ে তৈরি এই গল্পের অন্যান্য পার্শ্বচরিত্রগুলিও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এর মধ্যে একটি চরিত্র হল ‘এসিপি সাহেব’ (acp saheb)। সিরিয়ালের মূল চরিত্র নোয়াকে অত্যন্ত স্নেহ করেন তিনি। শিবু গুন্ডার দলবলের হাত থেকে নোয়াকে বাঁচানোর পরেই তাঁর পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় এসিপি সাহেবের। একটা সময় দেখা যায় কিয়ানের মা ও তিনি একে অপরকে আগে থেকেই চেনেন। জানা যায়, একে অপরের প্রতি একটা ভাললাগা ছিল এক সময় দুজনেরই। তবে কালের নিয়মে দুজনেই নিজেদের জীবনে এগিয়ে গিয়েছেন।
এখন প্রায় প্রতিটি সিরিয়ালের পুলিস চরিত্রের আগমন একটা স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক সময়েই পুলিসের চরিত্রে বেশ পরিচিত অভিনেতাদের অভিনয় করতে দেখা যায়। তবে দেশের মাটির এসিপি সাহেবের চরিত্রের নেপথ্যে যিনি রয়েছেন তিনি কিন্তু আসলেই একজন পুলিস অফিসার।
কি চমকে গেলেন তো? শুনতে অবাক লাগলেও একথা কিন্তু একেবারেই সত্যি। সিরিয়ালের এসিপি সাহেব বাস্তব জীবনে পুলিসের ডিআইজি, নাম প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় (prasun banerjee)। বাস্তব জীবনে তিনি মালদহ ও জলপাইগুড়ি ডিভিশনে ডিআইজি পদে কর্মরত। এছাড়াও কলকাতা পুলিসের ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের ট্রেনিং প্রোগ্রামের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।
বুঝতেই পারছেন, বাস্তব জীবনে এত দায়িত্ব সামলে আবার সিরিয়ালে অভিনয় করা চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। আসলে তাঁর অভিনয় জগতে আসাটাও বেশ অদ্ভূত ব্যাপার। দেশের মাটির লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ই তাঁকে অভিনয় করতে অনুরোধ করেন। লীনা গঙ্গোপাধ্যায় নিজে পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন। সেই সূত্রেই তাঁর আলাপ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
সুন্দর অভিনয়ের পাশাপাশি ডিআইজি সাহেবের প্রশাসনিক পেশাগত জীবনটাও কিন্তু যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে যুক্ত থাকেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার মতো অভিযানে অংশ গ্রহণ করেন তিনি।
একবার মার্কিন ডলার ও জালনোট উদ্ধারের ঘটনার তদন্তের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। বালুরঘাটে সক্রিয় একটি লরি ছিনতাই কাণ্ডের কিনারাও করেছিলেন তিনি। কাস্টমস অফিসারের পরিচয়ে লরি ছিনতাই করত এই চক্রের পাণ্ডারা। প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অপারেশন চালিয়ে ধরা হয় ছিনতাইকারীদের। নিজের কাজের জন্য বহুবার সম্মানিতও হয়েছেন ডিআইজি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।