বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এসএসসি নিয়ে তোলপাড় রাজ্যে, এরই মধ্যে শিরোনামে প্রাথমিকে (TET Scam) ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলা। মঙ্গলবার এই মামলা শুনানির জন্য ওঠে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court)। প্রথমেই সওয়াল করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত।
এজির সওয়াল, মামলায় প্রথমে কারও চাকরি বাতিলের আবেদন করা হয়নি। প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হলে তাদেরও যাতে সুযোগ দেওয়া
হয় সেই আবেদন করা হয়েছিল। এদিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়।
পর্ষদের উদ্দেশে বিচারপতি চক্রবর্তীর প্রশ্ন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করেছে। কী কী নির্ভরযোগ্য পদক্ষেপ করা হয়েছে? উত্তরের পর্ষদ জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। শূন্যপদের সংখ্যা ছিল ৪২৯০০।
আদালতে পর্ষদের সওয়াল বেশি নম্বর দেওয়ার অভিযোগ তুলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা যায় না। পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে চাকরি হয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি বলে দাবি করে পর্ষদ। পর্ষদের আইনজীবী আরও বলেন, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার নিয়ম মেনেই ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে। অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি। কয়েক জনের বক্তব্যের ভিত্তিতে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে বলে বক্তব্য পর্ষদের।
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিকে ” দুর্নীতি” বলে মানতে চায়না পর্ষদ। আদালতে পর্ষদের সওয়াল নিয়ম না মানলেই সেটা “দুর্নীতি” হয়ে যায়না। বারবার দুর্নীতি-দুর্নীতি বলতে থাকলেই দুর্নীতি প্রমাণ হয় না। আদালতে পর্ষদের আইনজীবী বলেন, যদি ধরেও নেওয়া হয় এখানে শুধুমাত্র নিয়ম না মানার অভিযোগ উঠেছে, তাহলে নিয়ম না মানার অভিযোগটাও দুর্নীতির সংজ্ঞার আওতায় আসে না। অর্থাৎ যে দুর্নীতির অভিযোগে এত কাণ্ড তা দুর্নীতি বলেই মানতেই নারাজ পর্ষদ।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহ ধরে বাতিল একগুচ্ছ ট্রেন, চরম দুর্ভোগের মুখে হাওড়া ডিভিশনের যাত্রীরা
এদিন রাজ্য এবং পর্ষদের সওয়াল শুনে কোনো নির্দেশ দেয়নি আদালত। গ্রীষ্মের ছুটির পর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে। ১২ জুন মামলার পরবর্তী শুনানি। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে রাজ্যের বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে নিয়োগ হয়। ২০১৬ সালে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বেআইনি বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ওই সংখ্যক চাকরি খারিজ করে দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। ২০২৩ সালে ৩২০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/8Y7itFJFfv8?si=IVJddMYVau2WNBDE
তবে চাকরি বাতিল হলেও বিচারপতির নির্দেশ ছিল, ওই শিক্ষকরা স্কুলে যাবেন। তবে তিন মাসের মধ্যে রাজ্যকে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তবে আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য। ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছিল রাজ্য সরকার। সেই মামলাই শুনানি চলছে হাইকোর্টে।