‘মাছ ছোট নয়, আঁশ ছাড়ালে ওজন কমে’, নওসাদের দাবি খারিজ করে পাল্টা যুক্তি কারামন্ত্রী অখিল গিরির

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির (ISF MLA Nawsad Siddique) অভিযোগ খারিজ করে দিলেন কারামন্ত্রী অখিল গিরি (Akhil Giri)। মমতার মন্ত্রীর সাফ কথা, জেলে বন্দিদের পাতে দেওয়া মাছের ওজনে কোথাও গরমিল নেই। প্রথমে অভ‌্যাসমতো হাতের মাপেই মাছ কেটে দাঁড়িপাল্লায় ওজন করে নেওয়া হয়। তারপর একেবারে ওজন করে ৭৫ গ্রামের পিস মেপে তার পর আঁশ ছাড়ানো হয়। এক গ্রাম কমও নয়, এক গ্রাম বেশিও নয়। তবে আঁশ ছাড়ালে সামান্য তো ওজন কমবেই। তাতেই যা কমার কমে। বন্দিদের দেওয়া খাবারে কোনও কারচুপি নেই। স্পষ্ট জানালেন কারামন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, বাংলার জেলগুলিতে বন্দিদের কেমন খাবার দেওয়া হয়, তার গুণমান নিয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি, বিধানসভা অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্ন ওঠে। সেখানেই নিজের জেল জীবনের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন ISF বিধায়ক। জেলের কয়েদিদের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।

নওসাদের দাবি ছিল, “জেলে মাছের সাইজ এতটাই পাতলা যে যিনি মাছে কাটেন তার হাতও কেটে যেতে পারে! এতই পাতলা!” তার আরও অভিযোগ ছিল, জেলবন্দিদের খাদ্যতালিকায় কারচুপির ফলে তারা পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে না। বলে রাখা ভালো, গত বছরের ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে আইএসএফ কর্মীদের খণ্ডযুদ্ধ বাধে। এরপর সেখান থেকেই এমএলএ নওসাদ-সহ ২১ জন আইএসএফ নেতা, কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার হওয়ার প্রায় দেড় মাস পর জেল থেকে মুক্তি পান নওসাদ।

nawsad siddique

সেই সময় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে নওশাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন কারামন্ত্রী অখিল গিরি। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারই জবাব দিলেন কারামন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, “নওসাদ ঠিক বলেননি। খোঁজ নিয়ে দেখেছি জেলের বন্দিদের সঠিক পরিমাণের মাছ-সহ অন্যান্য খাবার দেওয়া হয়।”

ব্যাখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “মাছের গায় আঁশ না থাকলে তখন তো তার ওজন একটু হলেও কমবেই। এর কারণেই মনে হতে পারে যে সরকারি পরিমাণের চেয়ে কম পরিমাণ মাছ দেওয়া হচ্ছে। তবে তা ঠিক নয়। নওসাদের অভিযোগের খোঁজ নিয়েছিলাম। রাজ্যের কোনও সংশোধনাগারে বন্দিদের কম পরিমাণ খাবার দেওয়া হয় না। বিধায়কের অভিযোগ ঠিক নয়।”

আরও পড়ুন: সরকারি টাকায় ‘ঢালাই রাস্তা হইল’ তবে বাস্তবে ইট পাতা! সন্দেশখালিতে ফাঁস শিবু, উত্তমদের দেদার দুর্নীতি

কারামন্ত্রী অখিল গিরির দেওয়া সরকারি হিসেব অনুযায়ী,“বন্দিদের জন্য প্রতিদিন ২৫০ গ্রাম চাল, ১০০ গ্রাম ডাল, ৩০০ গ্রাম সবজি তার সঙ্গে ১০০ গ্রাম আলু বরাদ্দ থাকে। সপ্তাহে একদিন করে ৭৫ গ্রাম মাছ, এবং সমপরিমান মাংস দেওয়া হয়। থাকে ডিম, সয়াবিন ২৫ গ্রাম। বিকেলে চারটে বিস্কুট-সহ চা। টিফিনে মুড়ির সঙ্গে বাদাম ও ডাল ভাজা দেওয়া হয়। যারা নিরামিষ খান তাদের জন্য দেওয়া হয় ২৫০ এমএল দুধ।”

 

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর