বাংলাহান্ট ডেস্ক: দেশের অন্যতম বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে (Punjab National Bank) ২,৪০০ কোটিরও বেশি টাকার একটি বৃহৎ ঋণ জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। ব্যাঙ্কটি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে (আরবিআই) জানিয়েছে, এসআরইআই ইকুইপমেন্ট ফিন্যান্স লিমিটেড এবং এসআরইআই ইনফ্রাস্টাকচার ফিন্যান্স লিমিটেড নামক দু’টি সংস্থার প্রোমোটারদের দ্বারা পরিকল্পিতভাবে এই ‘বরোয়াল ফ্রড’ বা ঋণ প্রতারণা চালানো হয়েছে। ব্যাঙ্কিং নজরদারি ও ঋণ অনুমোদন প্রক্রিয়া ফের প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
কোটি টাকার প্রতারণার সম্মুখীন পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (Punjab National Bank):
ব্যাঙ্কের স্টক এক্সচেঞ্জ ফাইলিং অনুসারে, দিল্লির একটি শাখা থেকে এসআরইআই ইকুইপমেন্ট ফিন্যান্সকে ১,২৪০.৯৪ কোটি টাকা এবং এসআরইআই ইনফ্রাস্টাকচার ফিন্যান্সকে ১,১৯৩.০৬ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করা হয়, যা মিলিয়ে মোট অঙ্ক দাঁড়ায় ২,৪৩৪ কোটির বেশি। ব্যাঙ্কিং পরিভাষায়, ঋণগ্রহীতা কর্তৃক ভুয়ো তথ্য প্রদান বা তহবিল অন্যত্র সরানোর মাধ্যমে সংঘটিত এই প্রতারণাকেই ‘বরোয়াল ফ্রড’ বলা হয়।
আরও পড়ুন: ৩২ লক্ষ ভোটার পাবেন ডাক, শুনানির আগের রাতেই নথি নিয়ে বড়সড় ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের
পিএনবি দাবি করেছে যে ইতিমধ্যেই বকেয়া পুরো অঙ্কের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক প্রভিশন করা হয়েছে, যাতে ব্যাঙ্কের আর্থিক স্বাস্থ্যের উপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনালের (এনসিএলটি) অধীনে কর্পোরেট ইনসলভেন্সি রেজোলিউশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই দুটি সংস্থার বিষয় নিষ্পত্তি করা হয়েছে এবং এই ঋণ জালিয়াতির আর্থিক প্রভাব ইতিমধ্যে তাদের হিসাব বিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এসআরইআই ইনফ্রাস্টাকচার ফিন্যান্স ১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরু করে এবং দীর্ঘকাল পরিকাঠামো অর্থায়নে সক্রিয় ছিল। তবে আর্থিক অনিয়ম ও ঋণ ফেরতে ব্যর্থতার অভিযোগে সংস্থাটি সংকটে পড়ে। ২০২১ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই দুটি সংস্থার বিরুদ্ধে দেউলিয়া প্রক্রিয়া শুরু করে এবং বোর্ড ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করে। ২০২৩ সালে এগুলির পুনর্গঠন ও নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

আরও পড়ুন: চাকরিপ্রার্থীদের জন্য বড় খবর! একাধিক শূন্যপদে নিয়োগ এই ‘ব্যাঙ্কে’, আবেদন করুন আজই
ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গেছে, এসআরইআই গ্রুপের এই দুটি সংস্থার বিরুদ্ধে মোট বকেয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় ২৮,০০০ কোটি টাকা ছিল। এই ঘটনা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে কর্পোরেট ঋণ প্রদানের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, নজরদারি ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা ফের উন্মোচন করেছে। বিশেষজ্ঞরা এখন বড় অঙ্কের কর্পোরেট ঋণে স্বচ্ছতা, কড়া জবাবদিহি এবং আরও শক্তিশালী পূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছেন।












