বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) দলীয় নেতাদের নির্ভীক থাকার কড়া বার্তা দিয়েছেন। রাহুল গান্ধী মিডিয়া সেল-এর ভলেন্টিয়ারদের সঙ্গে করা একটি বৈঠকে বলেছেন, যারা কংগ্রেস করেনা, আবার ভয়ও পায় না, তাঁরা আমাদের লোক। তাঁদের দলে নিয়ে এসো। আর যারা কংগ্রেস করে, এবং ভয়ও পায়। তাঁদের কংগ্রেস থেকে বের করে দাও। তাঁদের আরএসএসে যেতে বলও। তাঁদের দরকার নেই আমাদের। আমরা শুধু নির্ভীক মানুষদের চাই যারা আমাদের আদর্শে বিশ্বাসী।
অন্যদিকে পাকিস্তানের (Pakistan) প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও (Imran Khan) ভারত-পাকিস্তানের বন্ধুত্বের মধ্যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে বাঁধা বলে গণ্য করেছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে যে, রাহুল গান্ধী আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাবনা কী একই? নিজের ব্যর্থতা লুকোতে রাহুল গান্ধী কী পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন?
রাহুল গান্ধী বলেছেন, কংগ্রেসের বাইরে অনেক মানুষ আছে যারা ভয় পায়না, তাঁরাও আমাদের লোক। তাঁদের সবাইকে দলে নিয়ে এসো। রাহুল গান্ধীর এই বয়ানে স্পষ্ট যে, তিনি ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা ব্যানার্জী, শরদ পাওয়ার, অখিলেশ যাদব, উদ্ধব ঠাকরেদের কংগ্রেসের ছাতার তলায় নিয়ে এসে বড়সড় জোট করার চেষ্টায় রয়েছে।
রাহুল গান্ধী আরও একটি কথা বলেছেন, তিনি বলেছেন যারা ভয় পায়, তাঁদের কে দল থেকে বের করে দাও। এখন প্রশ্ন উঠছে যে, তিনি কী দলের বর্ষীয়ান নেতাদের উদ্দেশ্য করে এই বয়ান দিয়েছেন? উল্লেখ্য, দলের অনেক বর্ষীয়ান নেতা কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনের জন্য ভোটাভুটি করার দাবি করেছেন। এখন প্রশ্ন উঠছে যে, রাহুল গান্ধী কী নিজের বয়ানে এটা বুঝিয়ে দিলেন যে, কংগ্রেসে থাকতে গেলে শুধু মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বলে নিজেকে নির্ভীক প্রমাণ করতে হবে?
রাহুল গান্ধী এও বলেছেন যে, যারা ভয় পায় তাঁদের আরএসএসে চলে যেতে। কংগ্রেসের দরকার নেই তাঁদের। এখন প্রশ্ন উঠছে যে, রাহুল গান্ধী এই বার্তা কাকে দিলেন? উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছরে কংগ্রেসের যুব নেতা যেমন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, জিতিন প্রসাদরা দল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন। উনি কী তাঁদের উদ্দেশ্যেই এই বার্তা দিলেন? রাহুল গান্ধী স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, এরকম নেতারা চলে গেলে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। কিন্তু প্রকৃত সত্য হল, কংগ্রেস ছেড়ে যুব নেতারা চলে যাওয়ার কারণে গোটা ভারতেই কংগ্রেস ধীরে ধীরে গুঁটিয়ে আসছে।
রাহুল গান্ধীর এই বয়ানের পর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিজেপিও। গেরুয়া শিবির জানিয়েছে যে, রাহুল গান্ধী নিজের ব্যর্থতা ঢাকতেই এরকম বয়ান দিচ্ছেন। ওনার বয়ান আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বয়ানের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই। বিজেপি এও বলেছে যে, রাহুল গান্ধী নিজে ভয়ে রয়েছে আর দলের নেতাদের বলছে নির্ভীক থাকতে। বিজেপি পাল্টা আক্রমণ করে বলে, একটি পরিবার দশকের পর দশক ধরে দলে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখে আসছে, সেই পরিবারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললে দলীয় নেতাদের বাইরের রাস্তা দেখানো হচ্ছে। আর তাঁরাই আবার অন্যকে গণতান্ত্রিক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। এটা হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না।