হাওড়া থেকে বাঁকুড়া এক ট্রেনেই, মসাগ্রাম লাইন নিয়ে বড় আপডেট দিল রেল, খুশি যাত্রীরা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার পুরুলিয়া (Purulia) এবং বাঁকুড়ার (Bankura) বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষদের জন্য বড় সুখবর দিল রেল (Indian Railways)। কারণ, তাঁরা হাওড়া (Howrah) যাতায়াতের জন্য নতুন রেললাইন পেতে চলেছেন। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল হাওড়া যাতায়াতের দূরত্বও এবার অনেকটাই কমে আসবে। মূলত, বাঁকুড়া-মসাগ্রাম রেললাইনকে বর্ধমানের কর্ডলাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অর্থাৎ, এই কাজ আর সামান্যই বাকি রয়েছে। এমতাবস্থায়, রেল সূত্রে জানানো হয়েছে যে, খড়্গপুরের পরিবর্তে মসাগ্রাম হয়ে হাওড়া যাতায়াতের দূরত্ব এবার ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার কমে যাবে। যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই কমবে হাওড়া পৌঁছনোর সময়ও।

এমন পরিস্থিতিতে, লাভবান হবেন নিত্যযাত্রীরাও। পাশাপাশি, কলকাতা থেকে মালপত্র নিয়ে আসার খরচ এবং সময় উভয়ই কমবে। এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন, ‘‘রেললাইন সংযোগের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শীঘ্র এই নতুন রেলপথের উদ্বোধন করা হবে।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, দীর্ঘদিন ধরেই রেলের বিভিন্ন মহলে মসাগ্রাম থেকে বর্ধমানের কর্ডলাইনের সংযুক্তিকরণের দাবিতে যোগাযোগ করেছিলেন বাঁকুড়ার প্রাক্তন সাংসদ প্রয়াত বাসুদেব আচারিয়া।

এদিকে, একটা সময়ে তিনি লোকসভায় রেলের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান থাকার কারণে তাঁর সাথে রেলের বিভিন্ন মহলে যোগাযোগও খুব ভালো ছিল। সেই সময়ে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আধিকারিকদের সাথে দেখা করার মাধ্যমে ওই নির্দিষ্ট লাইনের সংযুক্তিকরণের দাবির বিষয়টি বারংবার উপস্থাপিত করেন তিনি। এমতাবস্থায়, এই বহুকাঙ্ক্ষিত রেলপথ চালু হলে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে বলে জানিয়েছেন “বাঁকুড়া দামোদর রিভার রেলওয়ে পরিবহণ ওয়েলফেয়ার সমিতি”-র সম্পাদক গঙ্গা গোস্বামী।

Railways gave a big update about Masagram line

উল্লেখ্য যে, ওই সমিতির সম্মিলিত আন্দোলনের জেরেই বাঁকুড়া থেকে সোনামুখী পর্যন্ত ন্যারোগেজ লাইন ব্রডগেজে উন্নীত হয়। জানিয়ে রাখি যে, ন্যারোগেজ থেকে ব্রডগেজে উন্নীতকরণের কাজ ১৯৯৫ সালে শুরু হয়। এদিকে, ২০০৫ সালে ওই কাজ শেষ হয়ে ওই বছরেই সোনামুখী পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু করা হয়। পরবর্তীকালে ক্রমশ রেললাইন পাতা হয় মসাগ্রাম পর্যন্ত। এদিকে, এখন মসাগ্রাম থেকে একদম বাঁকুড়া পর্যন্ত রেললাইনের বৈদ্যুতিকীকরণের কাজও সম্পন্ন হয়েছে।

আরও পড়ুন: স্নাতকের পরেই মিলবে ৭০ হাজারের বেতন! দুর্দান্ত সুযোগ দিচ্ছে SBI, এইভাবে করুন আবেদন

এদিকে, মসাগ্রাম থেকে বর্ধমানের কর্ডলাইন জুড়ে গেলে পাত্রসায়র থেকে শুরু করে সোনামুখী, ইন্দাস, রায়না, বেলিয়াতোড়ের মতো বহু এলাকার বাসিন্দারা সরাসরি হাওড়া যেতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন “বাঁকুড়া দামোদর রিভার রেলওয়ে পরিবহণ ওয়েলফেয়ার সমিতি”-র সম্পাদক গঙ্গা গোস্বামী। জানিয়ে রাখি যে, বাঁকুড়া থেকে খড়্গপুরের হয়ে হাওড়ার দূরত্ব হল ২৩১ কিলোমিটার। তবে, নতুন এই রেলপথের মাধ্যমে বাঁকুড়া থেকে হাওড়ার দূরত্ব কমে হবে ১৮৫ কিলোমিটারে।

আরও পড়ুন: ঝোড়ো ব্যাটার, ১ ইনিংসে করেছেন ৫৮৫ রান! IPL-এ বোলারদের বিপদ বাড়াবে ১৮ বছরের এই প্লেয়ার

এর পাশাপাশি আদ্রা থেকে হাওড়ার দূরত্ব ২৮৫ কিলোমিটার থেকে ২৩৯ কিলোমিটারে কমে দাঁড়াবে। এদিকে, লাইনের শেষ অংশে দামোদরের ওপরে সেতু নির্মাণের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এই বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ তথা বিদায়ী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার জানিয়েছেন, ‘‘বর্তমানে ওই রেলপথের খুবই সামান্য অংশের কাজ বাকি আছে। সেটি শেষ হলেই দ্রুত নতুন ট্রেন চালানো যাবে। আমরা চাইছি যে আদ্রা থেকে বাঁকুড়া, মসাগ্রাম হয়েই নতুন ট্রেন শুরু হোক।’’

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর