বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতীয় রাজনীতিতে বিতর্ক যেন পিছু হঠছেই না। এবার রামায়ণ-মহাভারতকে ইতিহাস হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন বিরোধীরা। মঙ্গলবার নতুন সংসদ ভবনের সংবিধান হল-এর সংবিধান গ্যালারিতে পা দিয়ে সাংসদরা দেখেন, সেখানে রামায়ণ-মহাভারতকে ইতিহাস হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘রামায়ণ (Ramayana) ও মহাভারত (Mahabharata) হল মহাকাব্য, যা আমাদের ইতিহাস বলে।’
আর এই নিয়েই ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক। উল্লেখ্য, রাম মন্দির (Ram Mandir) নিয়ে বিতর্কের সময় অভিযোগ উঠেছিল মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে রামায়ণকে ইতিহাস হিসেবে প্রমাণ করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। এবার নতুন সংসদ ভবনের সংবিধান গ্যালারিতেও এমনটা দেখা গেল। ভারতকে কেন ‘গণতন্ত্রের জননী’ বলা হয়, তার পক্ষে নানা যুক্তি তুলে ধরতেই রামায়ণ-মহাভারতের কথা আনা হয়েছে।
ওই অংশে বলা হয়েছে, দুই মহাকাব্যেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে মানুষের অংশগ্রহণের অনেক উদাহরণ রয়েছে। রামায়ণে রামের রাজ্যাভিষেক, মহাভারতে কুরু ও পুরু রাজ্যভিষেকের ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের সম্মতি জড়িত ছিল।
এদিকে সংবিধান গ্যালারিতে (Constitution Gallary) রামায়ণ-মহাভারতের সঙ্গে সঙ্গেই জায়গা পেয়েছে কৌটিল্য ও তাঁর শাসনের নীতি। সপ্তম এবং অষ্টম শতাব্দীর জনপদের শাসন ব্যবস্থা, বৌদ্ধ ও জনসংঘ অশোকের শাসন রীতি। তবে সেখানে মোঘল আমলের ছিটেফোঁটা উল্লেখ করা হয়নি। এদিকে এই নিয়ে বিরোধীরা দাবি করছেন, মোদী নিজে কি ভারতীয় ঐতিহ্য মেনে শাসন করেন? তাহলে তাঁর জমানায় সংখ্যালঘুদের উপরে আক্রমণের অভিযোগ উঠছে কেন?’
এই নিয়ে সিপিএমের (CPIM) পলিটব্যুরো সদস্য নীলোৎপল বসু বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলছি এরা পুরাণকে ইতিহাস এবং দর্শনকে ধর্মতত্ত্ব বলে চালাচ্ছে। ভারতের নতুন সংসদ ভবনের স্থপতিদের ভারতের সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। যে ভারতীয় পরিচিতি সত্তা স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছে তার বদলে এরা হিন্দুত্ববাদী পরিচিতি চাপিয়ে দিতে চাইছে।’
মুখ খুলেছেন তৃণমূল (TMC) সাংসদ জহর সরকারও। তিনি বলেন, ‘রামায়ণ-মহাভারত থেকে কেউ মূল্যবোধ অর্জন করলে তাতে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু তা থেকে হিংসা তৈরি হলে সেটা ঠিক নয়। তবে মোড়লতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সভা-সমিতি থাকলেও সেটাকে গণতন্ত্র বলতে গেলে অনেক তথ্যপ্রমাণ লাগবে।’