বাংলাহান্ট ডেস্ক : রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডে তদন্তভার বর্তেছে সিবিআইয়ের উপর। শনিবার থেকেই বগটুই রহস্য উদঘাটনে আদাজল খেয়ে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। আর তাতেই যে সমস্ত তথ্য একের পর এক উঠে আসছে তা যে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে রাজ্যের শাসকদলকে বলাই বাহুল্য।
বগটুই গণহত্যা কাণ্ডের তদন্ত যতই এগোচ্ছে ততই যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসছে। এবার রি মামলার তদন্ত চলাকালীন সামনে এল পুরভোটে শাসকদলের কারচুপি এবং সন্ত্রাসের ছবি। এলাকায় জিজ্ঞাসাবাদে ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছে পুরভোটে বুথ দখল এবং গন্ডগোলের ছবি। আর সেই সবেই পিছনে রয়েছে আনারুল হোসেন, ভাদু শেখ, জহিরুল হোসেনের মতন নামগুলিই।
সিবিআই সূত্রে খবর, রামপুরহাটের পুরসভা নির্বাচনে একাধিক বুথ দখলের দায়িত্ব ছিল ভাদু শেখের দলের উপর। অন্যদিকে রামপুরহাটের কিউবা নামে পরিচিত ১৭ নম্বর ওয়ার্ড। বামেদের অতি শক্ত ঘাঁটি এই ওয়ার্ড। এখানে প্রার্থীর মুখ দেখে নয়, ভোট পড়ে বামেদের দলীয় প্রতীক দেখেই। বাম ঝান্ডায় যেইই প্রার্থী হোন না কেন, জয় নিশ্চিত এই ওয়ার্ডে। এহেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জহিরুল শেখ এবং আনারুল হোসেন ঘনিষ্ঠ পান্থ দাসকে।
আর ভোটে সেই সমস্ত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেই এবার সিবিআইয়ের কাছে সোচ্চার হয়েছেন এলাকাবাসী। এমনকি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের হাতে তুলে দেওয়া হয় ভোটে হওয়া অত্যাচার এবং সন্ত্রাসের একাধিক ছবি এবং ভিডিও। সিবিআইয়ের হাতে এসেছে ওই দিনের সিসিটিভি ফুটেজও।
কিন্তু ভাদু-আনারুলকে বুথ দখলের নির্দেশ দিয়েছিল কে বা কারা? আর এই উত্তর খুঁজতে গিয়েই উঠে এসেছে বেশ কয়েকটি নাম। যার মধ্যে একজন হলেন তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য, পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান। অন্যজন হলেন সমু বন্দ্যোপাধ্যায়। রামপুরহাটের আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো এই সমু। পেশায় আইনজীবী সমু বন্দ্যোপাধ্যায় রামপুরহাট মহকুমা আদালতে গত ৭ বছর ধরর প্র্যাক্টিস করছেন। কিন্তু তাঁর স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দেখে চোখ কপালে সিবিআই কর্তাদের। আদালত ছেড়ে কেন পুরভোটে নাম জড়াল বিধায়কের ভাইপোর, কীভাবেই বা এই বিপুল ঐশ্বর্যর মালিক হলেন তিনি সেই উত্তরই আপাতত খুঁজছে সিবিআই। এই সমস্ত তথ্য উঠে আসাটা যে শাসকদলের পক্ষে মোটেই সুখকর হয়নি, তা বলাটা কার্যতই নিষ্প্রয়োজন।