দৈনিক রোজগার ১৫০ টাকা, ৬০ টাকার লটারির সৌজন্যে কোটিপতি বীরভূমের আচার বিক্রেতা

বাংলা হান্ট ডেস্ক : পেটের দায়ে চাটনি বেচতেন মুরারই থানার পলশা গ্রামের নূর আলম শেখ (Noor Alam Khan)। সারাদিনে মেরেকেটে রোজগার হত ১৫০ টাকার মত। মুদির দোকানে ধার বেড়েই চলছিল। রোজগার বৃদ্ধির রাস্তা না খুঁজে পেয়ে ভাগ্যের উপরেই সবটা ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। রোজগারের ১০০ টাকার মধ্যে ৬০ টাকাই ঢেলে দিতেন লটারির পেছনে। আশা ছিল, এই লটারিই (Lottery) হয়ত তার কপাল পরিবর্তন করবে। আর বাস্তবেও ‌সেটাই ঘটে গেল।

সূত্রের খবর, সম্প্রতি এক কোটি টাকার লটারি জিতেছেন নূর। খবরটা তার কাছেও এতটাই শকিং যে, ভয়ে দুদিন বাড়ি থেকেই বের হননি। যে টাকা তিনি জিতেছেন তা কীভাবে পাবেন? কোথায় কী করতে হবে সেইসব কোনও ধারণাই তার ছিলনা। শেষমেষ উপায় না পেয়ে, মুরারই থানায় আশ্রয় নিয়েছেন নূর‌।

এইদিন নূরকে এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘‘গত শুক্রবার চাটনি বেচে বাড়ি ফেরার পথে বাঁশলৈ বাজারে এক লটারির টিকিট বিক্রেতার কাছে থেকে ৬০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনি। বাড়ি ফিরে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। দুপুর একটায় খেলায় ফল বেরোয়। ওই টিকিট বিক্রেতার একটি টিকিট এক কোটি টাকা জিতেছে বলে গ্রামে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ঘুম ভেঙে, নম্বর মিলিয়ে দেখি আমিই জিতেছি।’’

আরও পড়ুন : কুকুর কামড়ালে প্রতিটি দাঁতের চিহ্নের জন্য মিলবে ১০ হাজার টাকা! বড় রায় দিল হাইকোর্ট

স্থানীয়দের কাছে নূর সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বলেন, বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে নূরের অভাবের সংসার। মাথা গোঁজার ঠাঁই বলতে একটা মাটির বাড়ি। ঝড়, বৃষ্টির সময় বড়োই অসুবিধায় পড়ে যান তিনি। এই সময়গুলো অন্য বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয় তাদের। অন্যদিকে পঞ্চায়েত প্রধান ঝর্না কাপুরি বলেন, ‘‘দুঃস্থ পরিবার। আগের সমীক্ষায় আবাস যোজনায় নাম ছিল না। উনি টাকা পাওয়ায় সকলেই খুশি।’’

আরও পড়ুন : ‘আমিই নিজেই দেবকে ফোন করব..’, বলিউড পারলে টলিউড কেন পারছেনা? জবাব জিতের

lottery

নূরকে তার পরিবারের কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, টাকা না থাকায় ছেলে মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করতে পারেনি। সংসারের হাল টানতে এখন টোটোর গ্যারাজে কাজ করে সে। তবে মেয়ের পড়াশোনা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন নূর। নূরের কথায়, “দিনের শেষে আয় হত ১০০-১৫০ টাকা। সেই টাকায় সংসার চালাবো না ওষুধের খরচ দেব? কোনও দিন ভাবিনি লটারি জিতব। পুলিশের কাছে আশ্রয় নিলে সমস্যা হবে না ভেবে থানায় এসেছি।”

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর