বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাবা রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick)। উত্তম কুমার, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের মতো তাবড় অভিনেতা, পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাঁর মেয়ে ইন্ডাস্ট্রির পরীক্ষাটা কতটা কঠিন ছিল কোয়েল মল্লিকের (Koel Mallick) কাছে? বাবা মা তারকা হলে সন্তানদেরও অবধারিত ভাবে পড়তে হয় তুলনার মুখে। কিন্তু বাবাই যদি মেয়েকে ছবি থেকে বাদ দিতে চান তবে?
এমনি পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল কোয়েলকে। না, মেয়ের অভিনয়ে আসা নিয়ে কোনো আপত্তি ছিল না রঞ্জিত মল্লিকের। আপত্তি ছিল স্বজনপোষনে। নিজের মেয়ে বলে নয়, কোয়েলের যদি যোগ্যতা থাকে তবেই সে সুযোগ পাবে ছবিতে। পরিচালক প্রযোজকদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন অভিনেতা।
অনেক কম বয়সে টলিউডে পা রেখেছিলেন কোয়েল। ‘নাটের গুরু’ ছবির হাত ধরে অভিষেক হয় তাঁর। পরিচালক ছিলেন হরনাথ চক্রবর্তী। তাঁকে ডেকে সেই সময় রঞ্জিত মল্লিক জানিয়েছিলেন, প্রথম দু একদিন শুটিং দেখতে। যদি যোগ্য মনে না হয় তবে কোয়েলকে বাদ দিয়ে নতুন নায়িকা নিতে।
আসলে অভিনেতা চাননি, তাঁর জনপ্রিয়তার জন্য মেয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে সুযোগ পাক। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সে সময়ের কথা বলতে গিয়ে রঞ্জিত মল্লিক জানান, তিনি চিন্তায় ছিলেন কোয়েলকে নিয়ে। যদি ছবি ব্যর্থ হয় তাহলে মেয়ের মনের উপরে চাপ পড়বে। সেই সঙ্গে পরিচালক প্রযোজকদেরও কোটি কোটি টাকার ক্ষতি। তাই নিজের মেয়েকেও ছবি থেকে বাদ দেওয়ার কথা বলতেও দুবার ভাবেননি অভিনেতা।
বাবার কথা শুনে স্বাভাবিক ভাবেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন কোয়েল। সব বাবা মায়েরাই তো চান সন্তানরা সুযোগ পাক। তাহলে তাঁর বাবা উলটোটা করছেন কেন? খুব মূল্যবান উপদেশ দিয়েছিলেন অভিনেতা। মেয়েকে বুঝিয়ে বলেছিলেন, “রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে বলে মানুষ তোমার প্রথম ছবি দেখতে যাবে। তারপর হয়তো দ্বিতীয়টাও। কিন্তু তৃতীয় ছবি থেকে তুমি আর রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে নও। নিজের যোগ্যতা নিজেকেই প্রমাণ করতে হবে। কোনো বাবা মাই সন্তানদের সবটা হাতে ধরে করিয়ে দেন না। শিখিয়ে দিতে পারেন।”
তবে রঞ্জিত মল্লিকের ভয়টা যে অমূলক ছিল তা প্রমাণ হতে দেরি হয়নি। পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী এসে জানিয়েছিলেন, খুব ভাল কাজ করছেন কোয়েল। অভিনেতা জানান, প্রথম থেকেই মেয়ের মধ্যে নিষ্ঠা দেখেছিলেন তিনি। তার জেরেই রঞ্জিত মল্লিকের মেয়ে নয়, কোয়েল মল্লিক হয়ে দেখিয়েছেন অভিনেত্রী।