বাংলাহান্ট ডেস্ক : আজ রথযাত্রা। রথযাত্রা উপলক্ষে পুরী জুড়ে সাজোসাজো রব। পুরীর মন্দির থেকে বেরিয়ে রথে চড়ে জগন্নাথ, সুভদ্রা ও বলরাম যাবেন মাসির বাড়ি। রথযাত্রা উপলক্ষে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে পুরীতে। কিন্তু আপনি কি এবার রথে পুরী যেতে পারেননি? মন খারাপ করবেন না। আপনার জন্য আজকের এই প্রতিবেদনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আজকের এই প্রতিবেদনে এমন কিছু বিখ্যাত রথযাত্রার সন্ধান দেবো যেগুলি বাংলায় হয়ে থাকে। হাতে যদি সময় থাকে তাহলে এখনই বেরিয়ে পড়তে পারেন।
• মাহেশ: বাংলার অন্যতম প্রাচীন ও প্রসিদ্ধ রথযাত্রাগুলির মধ্যে অন্যতম মাহেশ। ধ্রুবনন্দ ব্রহ্মচারী আনুমানিক ১৩০০ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি সময়ে এই রথযাত্রার সূচনা করেন। মাহেশের রথ যাত্রায় শুধু বাংলা নয়, দেশ-বিদেশ থেকেও বহু মানুষ আসেন। লোককথা অনুযায়ী, একটি নীলকন্ঠ পাখি বসে থাকে মাহেশের রথের চূড়ায়। পুরীর রথযাত্রা শুরু হলে সেই নীলকন্ঠ উড়ে যায়। তখন চলতে শুরু করে মাহেশের রথ। বলা হয়ে থাকে শুধুমাত্র প্রধান পুরোহিতই এই নীলকন্ঠ পাখিটিকে দেখতে পান।
• মায়াপুর: ISKON এর মন্দিরের জন্য মায়াপুর সারা পৃথিবী বিখ্যাত। পাশাপাশি মায়াপুরের রথযাত্রা পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত। কিন্তু রথযাত্রার দিন রথ বের করা হয় না মায়াপুরের মন্দির থেকে। বলরাম, জগন্নাথ এবং সুভদ্রা রথে চড়ে এই মন্দিরে আসেন। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, অনেক আগে মায়াপুর ও রাজাপুর নামের দুটি পাশাপাশি গ্রাম ছিল। এই রাজাপুর গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বৈষ্ণব ছিলেন। স্বপ্নাদেশ পেয়ে এক পুরোহিত প্রায় ৫০০ বছর আগে এই রাজাপুর গ্রামে শুরু করেন রথযাত্রা। রথ রাজাপুর থেকে যেত মায়াপুরে। মায়াপুর থেকে আবার রথ ফিরে আসত রাজাপুরে। বহুদিন এই রথযাত্রা বন্ধ থাকার পর ইসকন পুনরায় এটি শুরু করে।
• আমাদপুর: আমাদপুর গ্রামটি অবস্থিত বর্ধমান জেলার মেমারিতে। এই গ্রামের জমিদার পরিবারের প্রধান দেবতা রাধা মাধব। রথযাত্রার দিন এই রাধা মাধবকে নিয়ে সাড়ম্বরে রথযাত্রা হয়। এই রাধা মাধবের পুজো হয় গ্রামের এক প্রাচীন মন্দিরে। দুর্গা বাড়ি হয়ে রাধা মাধবকে ঘোরানো হয় গোটা গ্রামে।
• মহিষাদল: পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম পুরনো ও বিখ্যাত রথযাত্রারগুলির একটি হল মহিষাদলের রথযাত্রা। ২০০ বছরেও বেশি আগে ১৭৭৬ সালে এই গ্রামের জমিদার আনন্দলালের স্ত্রী জানকী আরম্ভ করেন এই রথযাত্রা।
• গুপ্তিপাড়া: ১৭৪০ সালে মধুসূদানন্দ এই রথ যাত্রার সূচনা করেন। গুপ্তিপাড়ার রথের একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে রয়েছে চল্লিশ কুইন্টাল খাবার লুঠ করার কথা। একটা সময় 36 ফুট উঁচু রথে থাকত বারোটি চাকা। ১৮৭৩ সালে বড় একটি দুর্ঘটনার পর সেই রথের চাকার সংখ্যা কমানো হয়। কিন্তু এখনো খুবই উল্লাসের সাথে এখানকার রথযাত্রা পালন করা হয়।