বাংলা হান্ট ডেস্ক : প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে চলছে এসএসসি নিয়োগ মামলার (SSC Recruitment Case) শুনানি। ‘এই নিয়োগপ্রক্রিয়া থেকে ভালো কিছু খুঁজে পাওয়া কঠিন।’ শুনানি শেষে এমনটাই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি দেবাংশু বসাক। টানা তিন মাস শুনানির পর বুধবার হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চে শেষ হল এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির শুনানি। রায় স্থগিত রাখা হলেও বিচারপতি কী বলতে চান তা তিনি আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, প্রাইমারীর পাশাপাশি এসএসসিতেও ব্যাপক দু্র্নীতি হয়েছে বলে মামলা ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে। দীর্ঘদিন ধরেই এইসমস্ত মামলা ঘোরাফেরা করছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, বিচারপতি অমৃতা সিনহা-সহ একাধিক বিচারপতির এজলাসে। তবে পরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, একটি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে এই সমস্ত মামলার নিস্পত্তি করতে। সেই নির্দেশ মেনেই গত ৫ ই ডিসেম্বর থেকে তৈরি করা হয় একটি বিশেষ বেঞ্চ।
প্রায় সাড়ে তিন মাস ব্যাপী এই সময়ে প্রতিদিনই এই মামলার শুনানি হয়েছে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চে। এবং অবশেষে বুধবার শেষ হয় এই মামলার শুনানি। শুনানি শেষে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের পর্যবেক্ষণ, ‘এই নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে ভাল কিছু খুঁজে পাওয়া কঠিন। অতিরিক্ত নিয়োগ সরাসরি বাতিল হওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন : ভারত বিদ্বেষের জের, পর্যটনের পর এবার চরম ‘শিক্ষা সংকট’ মলদ্বীপে! কোণঠাসা মুইজ্জু
বুধবার মামলাকারীদের হয়ে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম যে নথী জমা দেয় তাতে দেখা যায় শূন্যপদের চেয়েও নিয়োগ হয়েছে বেশি। অর্থাৎ নিয়োগের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে ব্যাপক দুর্নীতি। আইনজীবীদ্বয় দাবি করেছেন, ‘এটি সুপরিকল্পিত অপরাধ। প্রশাসনিক স্তরে যুক্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা উচিত।’ একই সাথে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নয়ছয় হওয়া টাকা ফেরানোর দাবিতেও সওয়াল করেছেন তারা।
আরও পড়ুন : ধেয়ে আসছে দুর্যোগ! আগামী ২-৩ ঘণ্টায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সতর্কতা দক্ষিণবঙ্গের ৯ জেলাতে: আবহাওয়ার খবর
যে তথ্য তারা আদালতে পেশ করেছেন তাতে দেখা গিয়েছে সাল ২০১৬ তে নবম-দশমের সময় ১১ হাজার ৪২৫টি নিয়োগপত্রের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। তবে সেবার নিয়োগ হয় ১২ হাজার ৯৬৪টি। অর্থাৎ শূন্যপদের চেয়ে ১৫৩৯ জনের নিয়োগ বাড়তি। একইরকমভাবে একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও ১৯৯ জনের বাড়তি নিয়োগ হয়েছে। গ্রুপ-ডি এর সময় বাড়তি নিয়োগ হয় ৬৬৯ জনের। গ্রুপ-সি এর ক্ষেত্রেও বাড়তি নিয়োগপত্র পেয়েছেন ৪১৬ জন।
আরও পড়ুন : দুই হিন্দু শিশুর গলা কেটে রক্ত পান! UP পুলিশের এনকাউন্টারে খতম অভিযুক্ত সাজিদ
যদিও চাকরিপ্রাপকদের আইনজীবী প্রমিত রায়ও সওয়াল করতে ছাড়েননি। সিবিআই এবং এসএসসি-র বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এসএসসি এবং CBI, কেউই বিশ্বাসযোগ্য নয়।’ বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘তবে আমরা কার উপর ভরসা করব?’ আইনজীবী বলেন, ‘আদালত নিজের স্বতন্ত্র সিদ্ধান্তের উপর বিশ্বাস রাখুক।’ এরপরেই ভর্ৎসনার সুরে বিচারপতি বলে ওঠেন, ‘এই আদালত তো উত্তরপত্র দেখার সুযোগও দিয়েছিল। কত জন এসে বলেছিলেন এই ওএমআর শিট আমার নয়?’