বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর জুলাই মাসে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। তারপর থেকে পেরিয়ে গিয়েছে বহু মাস। প্রায় বছর খানেক হতে চলেছে। গ্রেফতারির সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ওজন ছিল ১১০ কেজি৷ বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতির একের পর অভিযোগ আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে তাকে। আর কী, অগত্যা জেলের ঘানি টেনেই দিন কাটছে এককালের দাপুটে এই তৃণমূল নেতার। অন্যদিকে, মুখে ওঠেনা ভালো-মন্দ, জেলের ভাত খেয়ে নাকি অনেকটাই রোগা হয়ে গিয়েছেন পার্থবাবু! আর এই কমে যাওয়া ওজন থেকেই সমাধান হল ‘আংটি রহস্যের’৷
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখ পার্থর জামিনের আবেদনের ভার্চুয়াল শুনানির সময়ে হঠাৎই উঠে আসে ‘আংটি’ প্রসঙ্গ। কলকাতার বিচার ভবনের সিবিআই আদালতে আইনজীবীরা বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “পার্থ যে অত্যন্ত প্রভাবশালী তার উদাহরণ হল তার হাতে থাকা তিনটি সোনার আংটি। সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।” আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, যেখানে জেলে গয়না পরে থাকার অনুমতি থাকে না, সেখানে তিনি কিভাবে সেই অনুমতি পেয়েছেন৷
এরপর বিচারপতি প্রশ্ন করলে প্রথমে পার্থ আদালতে জানায়, ধর্মীয় কারণে তিনি আংটি গুলো পরেছেন। পরে বিচারক আইন নিয়ে প্রশ্ন তুললে শুনানি চলাকালীনই পার্থবাবু ফটাফট হাতের আংটিগুলি খুলে ফেলেন। তবে এখানেই শেষ নয়। এরপর এই বিষয়ে ইডির অভিযোগের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপারকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।
তবে সুপারের উত্তরে সন্তুষ্ট হয়নি আদালত। এরপরেই বিচারপতি এডিজি (কারা)-র কাছ থেকে ১৯ জুনের মধ্যে আংটি কাণ্ডের রিপোর্ট তলব করা হয়৷ আজ সেই দিন। পেশ করা হয়েছে রিপোর্ট। সূত্রের খবর, রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গতবছর আগস্ট মাসে পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে আসেন, তখন তার কাছে ছিল একটি হাতঘড়ি, একটি পেন। আর আঙুলে ছিল তিনটি সোনার আংটি৷
বাকি সবকিছু জমা করা গেলেও ওই তিনখান আংটি খোলা যায়নি৷ কারণ, পার্থ যখন জেলে আসে তখন তার ওজন ছিল ১১০ কিলোগ্রাম৷ আর স্বাভাবিকভাবেই আঙুলগুলো ফুলে ছিল৷ তাই আংটি খুলতে যেতেই নাকি ব্যথায় ছটফট করতেন তিনি। এরপর জেল তরফে বিষয়টি সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসারকেও নাকি জানানো হয়। সব শুনে তিনি আংটিগুলি না খোলারই পরামর্শ দেন৷ তাই কোনও উপায় না পেয়ে পার্থর আঙুলেই ছিল সেগুলি।
তবে এপ্রিল মাসে সেই শুনানির সময় আংটি নিয়ে কথায় উঠতেই পটাপট নিজেই টেনেটুনে আংটি খুলে ফেলেন পার্থ৷ জানা যায়, এই করতে গিয়ে তার আঙুলের ছালও উঠে যায়৷ পরে আঙ্গুল দেখানো হয় চিকিৎসককে৷ আদা এডিজি (কারা)র পেশ করা রিপোর্টে জানানো হয়, গত ১৯ এপ্রিল ওই শুনানির সময় পার্থর ওজন ছিল ১০০ কেজি৷ যার মানে পূর্বের চেয়ে ১০ কেজি কম। আর সেই কারণেই টেনে হলেও আংটি গুলি খুলে ফেলতে পেরেছিলেন পার্থ। আজ, সোমবার এডিজি-র দেওয়া চিঠির ভিত্তিতে শুনানিতে মিটলো ‘আংটি’ জট।