বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে কঙ্কালসায় দশা রাজ্যের। প্রাক্তন মন্ত্রী থেকে শুরু করে তৃণমূলের বহু নেতা বিধায়ক, চাকরি বিক্রির অভিযোগে জেলবন্দি বহুজনা। বঙ্গের নিয়োগ কেলেঙ্কারিতেই নবতম সংযোজন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra)। গত মঙ্গলবারই তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। এই ধৃত সুজয়বাবুকে গ্রেফতারির পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে।
আর এবার সরাসরি খুনের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। আজ থেকে প্রায় ৬ বছর আগে ২০১৭ সালের ২৬ অগস্ট বেহালার ফকিরপাড়া রোডে খুন হয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। সেই বৃদ্ধার মেয়ে নিজেকে সুজয়কৃষ্ণর ভাগ্নি বলে পরিচয় দিয়েছেন। আর মামার বিরুদ্ধেই মাকে খুনের অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।
মায়ের খুনের পিছনে ‘কালীঘাটের কাকু’ হাত রয়েছে বলেই আশঙ্কা তার। মহিলার দাবি, তার মাকে যড়যন্ত্র করে খুন করেছেন সুজয়কৃষ্ণ। এখানেই শেষ নয়, খুনের পর থেকে সেই বাড়ি তিনি তালা বন্ধ করে রেখে দিয়েছেন। এমনকি নিজের বাড়ি হাওয়া সত্ত্বেও তিনি নিজেই ঢুকতে পারছেন না বাড়িতে বলে অভিযোগ। আর এই সব কিছুর নেপথ্যে সুজয়কৃষ্ণ। অভিযোগ এমনটাই।
আর কি কি বললেন ওই মহিলা? তার কথায়, “আমার বাবা আগেই মারা গিয়েছেন। ফকিরপাড়া রোডের বাড়িতে একতলাতে আমার মা একাই থাকতেন। দোতলায় আমি, আমার স্বামী, সন্তানকে নিয়ে থাকতাম। ২০১৭ সালের ২৬ অগস্ট সকালে বেল বাজে বাড়ির। আমরা ভাবি মা নিজে খুলবে। কিন্তু, কেউ দরজা না খোলায় বারাবার বেল বাজতে থাকে। তখন নিজে গিয়ে দেখি মা ওঠেনি তখনও। অনেক ডাকাডাকির পরও সাড়া না পাওয়ায় প্রতিবেশীর সাহায্যে দরজা ভেঙে দেখি আমার মা নীচে মেঝেতে পড়ে আছে। মুখ দিয়ে, নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে। গলায় দড়ি জড়ানো রয়েছে। আমি ওই জিনিস দেখে ওখানেই অজ্ঞান হয়ে যাই।”
তারপর কি হল? মহিলা বলেন, “সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে আমার মা সান্টু বলে ডাকতেন। মা আমাকে বলেছিলেন, সান্টু কিছু করবে। বাড়ির বিষয়ে একটা সই চাইছিলেন। বাড়িটা আমার বাবার নামে রয়েছে। আমি তখন স্পষ্ট জানিয়েছিলাম আমি সই করব না। প্রোমোটার। সুজয় হয়তো বাড়িরটাকে নিয়ে কিছু করতে চাইছিল। তারপরেই এই ঘটনা। এদিকে আমার মায়ের দেহ উদ্ধারের পর আমাকে ও আমার স্বামীকে অভিযুক্ত করা হয়। সন্দেহ করা হয় সম্পত্তির জন্য মাকে খুন করেছি। তবে ওই সম্পত্তি তো আমারই।”
তার কথায়, ” হয়তো সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের ওই বাড়িটা দরকার ছিল। আজও বোধহয় দরকার আছে।” মহিলা আরও বলেন, “আমি যতদূর জানি ফকিরপাড়ার ওই শুরু ওই শেষ। ওর অনেক পাওয়ার। ওই ঘটনার পর বাড়ি যাতে কেউ ভাড়া না নেয়, বা কেউ না কেনে তার জন্য গোটা পাড়ায় পোস্টারও দিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। গোটা ঘটনায় পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। “পুলিশ তো শাসকদলের। আর সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র কে?” শেষে এই কথাই বলেন ওই মহিলা।