কলিযুগে শান্তি পেতে করুন মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের স্মরণ, করুন কৃষ্ণনাম

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ পূর্ব এবং উত্তরভারতের একজন লোকপ্রিয় বৈষ্ণব সন্ন্যাসী ও ধর্মগুরু হলেন চৈতন্য মহাপ্রভু (Chaitanya Mahaprabhu)। তিনি গৌড়বঙ্গের নদিয়া অন্তর্গত শ্রীধাম নবদ্বীপের বৈদিক ব্রাহ্মণ পরিবারে ফাল্গুনী পূর্ণিমার সন্ধ্যাকালে সিংহলগ্নে চন্দ্রগ্রহণের সময় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা হলেন পণ্ডিত শ্রীজগন্নাথমিশ্র এবং মাতা হলেন শ্রীমতী শচীদেবী।  তিনি বৈষ্ণব ধর্মের একজন ধর্মগুরু হিসাবে পিরিচিত ছিলেন।

img 3133

 

চৈতন্যদেবের আসল নাম ছিল শ্রীবিশ্বম্ভর মিশ্র। ছোট থেকেই প্রচুর জ্ঞান অর্জন করে তিনি স্বনামধন্য পণ্ডিত হিসাবে পরিচিত হন। তার প্রথম ধর্মপত্নী হলেন লক্ষ্মীপ্রিয়াদেবী। বৈষ্ণবগণ তাঁকে  শ্রীরাধাকৃষ্ণের যুুুগল প্রেমাবতার বলে মনে করেন। তিনি ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে হরিনাম মন্ত্রটি জনপ্রিয় করে তোলেন। এবং তিনি রাধা ও কৃষ্ণ রূপের পরম সত্ত্বার উপাসনা প্রচার করেছিলেন।

মহামন্ত্র
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

পঞ্চতত্ত্ব নবদ্বীপ

পুরাণ মতে, শ্রীচৈতন্যদেব সন্ন্যাস নেওয়ার পর এক বছরের মধ্যে শান্তিপুরে গিয়েছিলেন শচীমাতাকে দর্শনের জন্য। সেখান থেকে তাঁর পুরীধামে চলে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু অচমকা পুরীর যাত্রা বাতিল করে তিনি নবদ্বীপে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী সেই সময় বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও তিনি স্ত্রীর মুখদর্শন করেননি। তাঁর কারণ সন্ন্যাসীদের স্ত্রীর মুখদর্শনের কোন নিয়ন ছিল না। তাই মহাপ্রভু উঠানে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। তখন তাঁর স্ত্রী স্বামী প্রণাম করে দেখেন, প্রভু তাঁর পাদুকা জোড়া রেখে গেছেন। সেই রাতেই বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী মায়ের স্বপ্নাদেশ অনুসারে জন্মভিটের নিম গাছ থেকে কাঠের বিগ্রহ তৈরি করেন এবং তাঁর সাথে পাদুকা পূজাও করতে শুরু করেন।

11923197 445801028937951 4218484169116317576 n

পুজো করছিলেন। সন্ন্যাসীদের স্ত্রীর মুখ দর্শনের নিয়ম নেই। তাই উঠোনে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন মহাপ্রভু। বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী ঘর থেকে বের হয়ে স্বামীকে প্রণাম করতে যান। প্রণাম শেষ হতেই বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী দেখেন, এক জোড়া পাদুকা রেখে গিয়েছেন মহাপ্রভু। সামনে মহাপ্রভু নেই। ওই দিন রাতে বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী মায়ের স্বপ্নাদেশ পান, জন্মভিটের নিম গাছ থেকে কাঠের বিগ্রহ তৈরি করে পুজো করতে এবং তার সঙ্গে পাদুকাও পুজো হবে। তখন থেকেই মহাপ্রভুর পাদুকা পুজো হয়ে আসছে।

c20637f0acb7b9c12ccf39a7a6ea756c

চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী অবলম্বনে রচিত কাব্যগ্রন্থ গুলির মধ্যে শ্রীকৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত, শ্রীবৃন্দাবন দাস ঠাকুরের শ্রীমদ্ চৈতন্য ভাগবত, এবং শ্রীলোচন দাস ঠাকুরের শ্রীশ্রীচৈতন্যমঙ্গল উল্লেখযোগ্য।

 


Smita Hari

সম্পর্কিত খবর