Malda: স্নাতকোত্তরে গবেষণার বিষয় ‘চপশিল্প’, রাতারাতি সংবাদের শিরোনামে মালদহের মেয়ে কণা

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বেশ কয়েক বছর আগে এক জনসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM of West Bengal Mamata Bnaerjee) চপ শিল্পের কথা বলেছিলেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন জীবন ধারনের জন্য কোনও কাজই ছোট নয়। উদাহরণ হিসাবে টেনে আনেন তেলেভাজা বিক্রির কথা। এটাকে তিনি সেসময় ‘চপশিল্প’ বলে আখ্যা দেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই কথাতেই ‘অনুপ্রাণিত’ হয়ে গ্রামীণ চপশিল্প কী ভাবে সংসার চালানোর মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে তা নিয়েই গবেষণা করেন মালদহের মেয়ে কণা সরকার (Kana Sarkar)।

জানা যাচ্ছে, স্নাতকোত্তর পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণাপত্রও জমা দিয়েছেন তিনি। কণা রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Raigunj University) ভূগোল বিভাগের  (Geography Department) চতুর্থ সেমেস্টারের ছাত্রী। তাঁর গবেষণার বিষয় হলো, ‘গ্রামীণ চপশিল্প এবং সংসার পরিচালনায় তার প্রভাব’। গবেষণার এই কাজ তিনি করেছেন মালদহ জেলার গাজোল-১, গাজোল-২ এবং করকোচ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।

তবে গবেষণার বিষয়টি কণা নিজে বেছে নেননি। বিষয়টি নির্ধারণ করতে সাহায্য করেন তাঁর ‘গাইড’ তথা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক তাপস পাল। হঠাৎ কেন এমন বিষয় বাছলেন? তাপসবাবু বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিতে ৮৩ শতাংশ মানুষ অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করেন। এই শ্রেণিতে রিকশাওয়ালা, টোটোওয়ালা থেকে তেলেভাজা বিক্রেতারাও রয়েছেন। এই অংসগঠিত ক্ষেত্রকে সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনতে হবে। তার জন্য চাই তথ্য। যাঁরা চপ বিক্রি করেন, তাঁদের মাসে কত টাকা উপার্জন হয়? এই বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য দরকার আমাদের। সেটার জন্যই এই গবেষণা করা। এই গবেষণা থেকে জানতে পেরেছি মহিলারা তেলেভাজা বিক্রি করে মাসে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। পুরুষদের ক্ষেত্রে সাধারণত সেই আয় ১৫ হাজার টাকার মতো হয়ে থাকে।’

download 1 61

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চপশিল্প ধারণায় অনুপ্রাণিত? তবে প্রশ্ন ওঠে গবেষণাপত্রের উপরে ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চপশিল্প ধারণায় অনুপ্রাণিত হয়ে গবেষণায় চপশিল্প’ লেখা কেন? তাহলে কি শাসক দলকে কিছুটা খুশি করার চেষ্টা? জবাবে তাপস পাল বলেন, ‘এটা প্রাথমিক এবং ব্যক্তিগত কপিতে লেখা হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেটা জমা দেওয়া হয়েছে তাতে এই লেখাটা নেই।’

এই প্রসঙ্গে কণা সরকার বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর চপশিল্প নিয়ে মন্তব্যের পরে অনেক সমালোচনা হয়েছিল। সেখান থেকেই আমার মাথায় এই গবেষণার ভাবনা আসে।’ তিনি বলেন, ‘আমি গবেষণা করে দেখেছি, পথচলতি যে সব চপের দোকান দেখা যায়, সেগুলির উপরে অসংখ্য মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। চপশিল্পের মাধ্যমে মহিলারা কতটা স্বনির্ভর হতে পেরেছেন সেটাও আমার এই গবেষণা পত্রে দেখানো হয়েছে।’

Sudipto

সম্পর্কিত খবর