বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মনিটারি পলিসি কমিটি (MPC) বুধবার রেপো রেট (Repo Rate) ৫.৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখার ঘোষণা করেছে। এই সিদ্ধান্তটি বৈঠকের সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া হয়েছে। যার নেতৃত্বে ছিলেন RBI গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, গত কয়েক মাসে, রেপো রেট ৩ বার কমানো হয়েছে। যার ফলে মোট ১০০ বেসিস পয়েন্টের স্বস্তি এনেছে। কিন্তু এখন, উৎসবের মরশুমে ঋণের সম্ভাব্য চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে, RBI বর্তমানে কোনও পরিবর্তন থেকে দূরে রয়েছে। এর পাশাপাশি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তার মেট্রিক নীতির অবস্থান “নিউট্রাল’ অর্থাৎ ভারসাম্যপূর্ণ রেখেছে। এদিকে, SDF হার ৫.২৫ শতাংশ এবং ব্যাঙ্ক রেট ৫.৭৫ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
RBI রেপো রেটে (Repo Rate) কোনও পরিবর্তন করেনি:
মুদ্রাস্ফীতি ক্রমাগত কমছে: RBI এমন এক সময়ে রেপো রেট (Repo Rate) স্থিতিশীল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যখন মুদ্রাস্ফীতি ক্রমাগত কমছে এবং বিদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু উদ্বেগও সামনে এসেছে। মূলত, ২০২৫ সালের জুন মাসে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি (CPI) মাত্র ২.১ শতাংশে নেমে এসেছে। যা সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও কম। অন্যদিকে, আমেরিকা আগামী ৭ অগাস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে। যার ফলে ভারতের জন্য রফতানি ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। এর ফলে বাণিজ্যে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে।
RBI অর্থনীতিকে ভারসাম্যপূর্ণভাবে পরিচালনা করতে চায়: এদিকে, RBI-এর এই সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করে দেয় যে তারা দেশের অর্থনীতিকে ভারসাম্যপূর্ণভাবে পরিচালনা করতে চায়। RBI দ্রুত সুদের হার (Repo Rate) কমাচ্ছে না বা মুদ্রাস্ফীতির দিক থেকে চোখ ফেরাচ্ছে না। এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে, এই সিদ্ধান্ত কী একবারের জন্য, নাকি RBI সুদের হার আরও কমাবে? এর উত্তর RBI-এর আসন্ন নির্দেশিকায় পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: ওভালে ঐতিহাসিক জয়ের পরেও কেন সেলিব্রেশন করলনা টিম ইন্ডিয়া? অবাক করবে কারণ
২০২৭ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের জন্য RBI-র সতর্কতা: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, RBI দেশের মুদ্রাস্ফীতি সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুমান প্রকাশ করেছে। RBI এর মনিটারি পলিসি কমিটি এখন বলেছে যে ২০২৫-২৬ (FY ২৬)-এ খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার গড়ে ৩.১ শতাংশ হতে পারে। আগে এই অনুমান ছিল ৩.৭ শতাংশ। অর্থাৎ, এখন আশা করা হচ্ছে যে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা কমবে। তবে, RBI FY২৭-এর প্রথম ত্রৈমাসিকের জন্য একটি সতর্কতাও দিয়েছে। তাদের মতে, সেই সময়ে খুচরো মুদ্রাস্ফীতি (CPI) ৪.৯ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। যা RBI এর লক্ষ্যমাত্রা ৪ শতাংশের ওপরে। অর্থাৎ, আগামী সময়ে দাম আবার বাড়তে পারে। এদিকে, RBI আরও অনুমান করছে যে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (Q2) মুদ্রাস্ফীতি ২.১ শতাংশ, তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (Q3) ৩.১ শতাংশ এবং চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (Q4) এটি ৪.৪ শতাংশ হতে পারে। এ থেকে স্পষ্ট যে বছরের শেষ নাগাদ মুদ্রাস্ফীতি ধীরে ধীরে বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন: অর্থাভাবে চিকিৎসক হতে পারেননি দাদা! অদম্য জেদে NEET পরীক্ষায় সফল হয়ে সেই স্বপ্নপূরণ ভাইয়ের
শুল্ক এবং বিশ্ব বাণিজ্যের সমস্যা ভারতেও দামের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে: RBI আরও জানিয়েছে যে, খাদ্যপণ্যের, বিশেষ করে সবজির দামে আগামী মাসগুলিতে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হতে পারে। এছাড়াও, আমেরিকার মতো দেশগুলির দ্বারা আরোপিত নতুন আমদানি কর (শুল্ক) এবং বিশ্ব বাণিজ্যের সমস্যাগুলিও ভারতে দামের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমানে, RBI-এর অবস্থান ভারসাম্যপূর্ণ। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা তাড়াহুড়ো করে সুদের হার (Repo Rate) পরিবর্তন করবে না বা কোনও এক দিকে সিদ্ধান্ত নেবেন। অর্থাৎ, দেশ ও বিদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী নীতিমালা নির্ধারণ করা হবে।