বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর জি করে (RG Kar) হত্যাকাণ্ড। আর তারপরই কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসে কেউটে। আর জি কর হাসপাতালে দুর্নীতির তদন্তে নেমে দুশো কোটি টাকার বেশি কেলেঙ্কারির হদিস পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)। ওষুধ কেনা থেকে হোক বা হাসপাতালের বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট বিক্রি সমস্ত ক্ষেত্রেই পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি। আর এই দুর্নীতিরর সঙ্গেই ‘ঘনিষ্ঠ’ যোগ সন্দীপের (Sandip Ghosh)।
তদন্তে নেমে সিবিআই-এর দাবি, হাসপাতালে টাকার একটা বড় অংশ দিয়ে পকেট ভরিয়েছেন হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এই দুর্নীতি করে মোট কত টাকা ‘গ্রাস’ করেছেন তিনি, সেই হিসেব কষছেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রে দাবি, ওষুধ সরবরাহকারী সংস্থার কাছ থেকে আর জি করের পর্দা ও সোফা কেনা হয়েছে বলে খাতায়কলমে দেখেনো হয়েছে। তবে বাস্তবে তা আসেনি।
নিম্নমানের ওষুধ সরবরাহের অভিযোগ আগেই উঠেছিল। সিবিআই সূত্রে দাবি, শুধু নিম্নমানের ওষুধ কেনা হয়েছে তেমনটাই নয়, পাশাপাশি যে পরিমাণ মেডিসিন, স্যালাইন কেনা হয়েছে বলে কাগজেকলমে উল্লেখ রয়েছে, বাস্তবে সেই পরিমাণ সামগ্রী হাসপাতালে পৌঁছায়ই নি। সার্জিকাল বিভিন্ন সামগ্রীর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা। এভাবেই দেদারে চলেছে দুর্নীতি। দিনের পর দিন সরকারি কোষাগার থেকে টাকা বেরিয়ে গেছে ঠিকই তবে তা দিয়ে ভরেছে দুর্নীতিবাজদের পকেট।
আর জি কর দুর্নীতির তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা প্রচুর পরিমাণে জাল ইনভয়েসের খোঁজ পেয়েছেন বলেও সূত্রের খবর। এদিকে নিয়োগ দুর্নীতির মতো আর জি কর দুর্নীতির তদন্তে নেমেও একের পর এক ভুয়ো কোম্পানির হদিস পেয়েছেন গোয়েন্দারা। কাগজে-কলমে কোম্পানি দেখানো হলেও আদতে তা অস্তিত্বহীন। আর জানা গিয়েছে এই সব কোম্পানিগুলি তৈরি হয় ২০১৪-র পর থেকে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের টেন্ডার দেওয়ার উল্লেখ রয়েছে খাতায়কলমে। সেই সূত্র ধরেই তদন্তে নামে সিবিআই।
আরও পড়ুন: গাইডলাইন প্রকাশ করুন! রাজ্যকে কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের, সমস্যার সমাধান হবে?
কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, অফিসের যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে সেখানে গিয়ে তদন্তকারীরা দেখেছেন, কোনও কোম্পানির অস্তিত্বই নেই! আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে ঠিক ঠিকানা থাকলেও হয় সেখানে রয়েছে খালি গোডাউন বা খালি জমি। এদিকে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ উঠে এসেছে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে সন্দীপ নিজের পচ্ছন্দমতো কোম্পানিকে হাসপাতালের টেন্ডার পাইয়ে দিতেন। আর তার বিনিময়ে নিতেন মোটা কমিশন। টেন্ডার পিছু ২০-৩০ শতাংশ কমিশন নিতেন সন্দীপ। তদন্তে নেমে এমনই বিস্ফোরক তথ্য হাতে পেয়েছে সিবিআই। উল্লেখ্য, আর জি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় বর্তমানে জেলবন্দি সন্দীপ ঘোষ।