বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলায় সর্বশক্তি দিয়ে লড়াইয়ের পরেও বিধানসভা নির্বাচনে আশাপূরণ হয়নি বিজেপির (BJP)। একশো পেরোনোর আগেই থমকে গিয়েছে তাদের পরিবর্তন রথ। তার জেরে ইতিমধ্যেই কৈলাস বিজয়বর্গীয় (Kailash BijoyBargiya) সহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাদের রণনীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একদিকে যেমন ২০২৪ সালের লোকসভার কথা মাথায় রেখে মন্ত্রীসভায় বেশকিছু রদবদল করেছে বিজেপি। তেমনি বাংলাকে যে আলাদা প্রাধান্য দেওয়া হবে তা বোঝা গিয়েছে মন্ত্রী তালিকা থেকেই।
শুধু মন্ত্রী মন্ডলে বাংলার গুরুত্ব বাড়ানো নয়, ইতিমধ্যেই দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) শুভেন্দু অধিকারীদের (Suvendu Adhikari) সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছে কেন্দ্র। যার জেরে বোঝাই যাচ্ছিল একদিকে যখন চব্বিশে দিল্লিকে পাখির চোখ করতে চাইছে তৃণমূল, তখন অন্যদিকে বিজেপির পাখির চোখ কিন্তু বাংলা।এও শোনা যাচ্ছিল দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে পারে সংঘ অর্থাৎ আরএসএস (Rashtriya Swayamsevak Sangha)। কার্যত সেই সূত্র ধরেই বাংলায় এবার বড়োসড়ো পরিবর্তন এলো রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সংগঠনে। সরিয়ে দেওয়া হলো মুকুল রায় (Mukul Roy) ঘনিষ্ঠ প্রদীপ যোশীকে (Pradeep Joshi)।
গত পাঁচদিন ধরে মধ্যপ্রদেশের চিত্রকূটে বৈঠক করেছেন আরএসএস শীর্ষ নেতৃত্ব। এই বৈঠকেই শ্রী দত্তাত্রেয় জী হোসবলে ঘোষণা করেন, পূর্ব ক্ষেত্র প্রচারকের দায়িত্বে আনা হল রমাপদ পালকে (Ramapada Pal) ,এছাড়া কলকাতা কেন্দ্রের নতুন সহ ক্ষেত্র প্রচারক হলেন জলধর মাহাতো (Jaladhar Mahato)। বাংলা থেকে সরিয়ে চণ্ডীগড়ের দায়িত্ব পেলেন শ্রী প্রদীপ যোশি। আর দক্ষিণবঙ্গ প্রান্ত প্রচারকের দায়িত্ব পেলেন প্রশান্ত ভট্ট।
কেন এই রদবদল? বিশ্লেষকদের মতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কথামতই কাজ করেছিলেন প্রদীপ যোশি। তৃণমূল থেকে নেতাদের আসায় সায় দিয়েছিলেন তিনিও। বাংলায় হারের পর স্বাভাবিকভাবেই তার কাজে ক্ষুব্ধ সংঘ। অন্যদিকে রমাপদ পাল মূলত দিলীপ ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তার সঙ্গে জলধরের সম্পর্কও ভালো। তাই আগামী দিনে লোকসভার কথা মাথায় রেখে বাঙালি এক মুখকে দায়িত্বে নিয়ে এলো আরএসএস। একদিকে দিলীপ শিবিরের মত যখন এমনই তখন সংঘ অবশ্য বলছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জলধর এবং রমাপদ পালের কম্বিনেশন। বহুদিন পরে একসাথে প্রচারকের কাজ করেছেন তারা বাংলা থেকেও আগামী দিনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে পারবেন এই দুই বর্ষীয়ান প্রচারক।
তবে মুকুল রায় চলে যাওয়ায় দিলীপ শিবিরের গুরুত্ব যে বাড়ছে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এধরনের দায়িত্ব রদবদলের ঘোষণা সাধারণত হয় মার্চ মাসে সরসংঘচালকদের সম্মেলনে। কিন্তু বাংলা নির্বাচনে যে হার হয়েছে উত্তর প্রদেশ এবং অন্য বিধানসভার নির্বাচন গুলিতে পুনরায় তা করতে চায়না সংঘ। কারণ ইতিমধ্যেই কৃষি বিল এবং অন্যান্য কারণে বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিরোধী হওয়া স্পষ্ট। আর তাই লোকসভার আগে বাংলায় মাটি আরও বেশী মজবুত করতে চায় তারা। অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।