বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সল্টলেকের এক অভিজাত এলাকায় বহুদিন ধরে চলছিল অদ্ভুত সব ঘটনা। তুকতাক, ছাগলের কাটা মাথা, সিঁদুর মাখানো রীতিনীতি, এমনকি গ্যাস সিলিন্ডার জ্বালিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টার অভিযোগ। পরিবারের দাবি, মৃত স্বামীর আত্মার শান্তির কথা বলে বড় বউমা এমন সব কাজ করছেন, যা তাঁদের জীবনকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। শেষমেশ ভয়ে ও অতিষ্ঠ হয়ে হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির বড় ছেলে ও বড় বউমার সম্পর্কে অনেকদিন ধরেই সমস্যা চলছে। ২০০৭ সাল থেকে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলমান। সেই সময় থেকেই বড় বউমা একমাত্র সন্তানকে নিয়ে সুকিয়া স্ট্রিটে থাকতেন, আর স্বামী থাকতেন সল্টলেকের করুণাময়ী আবাসনে মা ও ছোট ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে। চলতি বছরের অক্টোবরে বড় ছেলের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর সুকিয়া স্ট্রিটে পৌঁছতেই অভিযোগ বউমার আচরণ হঠাৎ করেই পরিবর্তন হয়।
ছাগলের কাটা মাথা হাতে বাড়িতে হাজির বউমা!
পরিবারের দাবি, একদিন ওই মহিলা হাতে নিয়ে আসেন একটি ছাগলের কাটা মাথা। সেই মাথায় সিঁদুর পরিয়ে ঘরে নিয়ে গিয়ে পুজো করেন তিনি। এমন তুকতাক আগেও চলছিল, কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ করে পরিবার।
গ্যাস সিলিন্ডার জ্বালিয়ে সবাইকে নিয়ে মরতে চাওয়ার অভিযোগ
অভিযোগ, ৩১ অক্টোবর ওই মহিলা গ্যাস সিলিন্ডার অন করে সবাইকে নিয়ে কার্যত আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন।
দেওর বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারধরও করেন বলে দাবি পরিবারের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তবুও সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি বলে জানান তাঁরা।
হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ মানলেন না বউমা, পাল্টা চ্যালেঞ্জ
পরিবার আদালতে গেলে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) সিঙ্গল বেঞ্চ মহিলার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু পরিবার জানায়, ওই মহিলা সেই নির্দেশ মানেননি। উল্টে তিনি ও তাঁর ছেলে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান। মহিলার দাবি, শাশুড়িকে ভুল বুঝিয়ে ছোট ভাই নাকি ফ্ল্যাট-সহ সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছে। তাঁকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে, যাতে বড় ভাইয়ের পরিবার কোনও অধিকার না পায়।

আরও পড়ুনঃ “ইডি ইচ্ছে মতো…”, ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বাইরে বোমা ফাটালেন অর্পিতা
পুলিশের রিপোর্ট তলব করল ডিভিশন বেঞ্চ
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। আদালত পুলিশের কাছে মহিলার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট চেয়েছে। সিঙ্গল বেঞ্চে পূর্বে জমা দেওয়া নথিও দেখতে চেয়েছেন বিচারপতি। পুলিশকে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে সেই সমস্ত নথি জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।












