পাগরিধারী IPS-কে ‘খালিস্তানি’, জানেন কে এই জশপ্রীত সিং? মাথা ঘুরিয়ে দেবে তার পরিচয়

   

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘খলিস্তানি’ মন্তব্য নিয়েই সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। ক্রমশই চড়ছে রাজনীতির পারদ। জানুয়ারির পর চলতি মাসের শুরুতে ফের জ্বলে ওঠে সন্দেশখালি। মঙ্গলবার সন্দেশখালি যাওয়ার পথে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) বাধা দেয় রাজ্য পুলিশ। হাই কোর্টের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও বারংবার বাধা দেওয়ায় এদিন পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন শুভেন্দু, অগ্নিমিত্রারা। সেই সময় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ধামাখালিতে জনৈক পুলিশ কর্তা জশপ্রীত সিংকে ‘খালিস্তানি’ বলে আক্রমণ করার অভিযোগ ওঠে। আর ‘খলিস্তানি’ ইস্যু নিয়েই এখন তোলপাড়।

বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে পুলিশি বাকবিতণ্ডার মধ্যেই এক পাগরিধারী আইপিএসকে ‘খালিস্তানি’ বলে দেগে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। ওই আইপিএসের নাম জসপ্রীত সিং (Jashpreet Singh)। পাগরি থাকায় তাকে উদ্দেশ্য করে কেন ‘খালিস্তানি’ বলা হচ্ছে সঙ্গে সঙ্গেই তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জসপ্রীত। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক।

ইতিমধ্যেই এই ইস্যুকে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমেছে শাসকদল। পুলিশ অফিসারকে ‘খালিস্তানি’ আক্রমণের নিন্দা করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন শুভেন্দু। শুধু তাই নয়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে পারলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন বিরোধী দলনেতা।

শুভেন্দুর দাবি, “আমি বা আমার দলের কেউ কোনও ধর্মকে আক্রমণ করে কিছু বলেনি। আগামীদিনেও কখনও এরম কিছু ঘটবে না। আমরা গুরু নানকজিকে প্রণাম করি। শিখ ধর্মকে সম্মান করি।” বরং শুভেন্দুর পাল্টা দাবি, ” জনৈক পুলিশ অফিসার চিৎকার করে আসলে মুখ্যমন্ত্রীর সুনজরে আসতে চেয়েছেন।”

তবে যাকে নিয়ে এত বিতর্ক সেই জসপ্রীত সিং আসলে কে? জানা গিয়েছে, এর আগে ইসলামপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন জসপ্রীত সিং। উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বিশেষ টাস্ক ফোর্সেও কাজ করেছেন তিনি। বিধাননগর জোনের ডেপুটি কমিশনার ছিলেন জসপ্রীত। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলায় অতিরিক্ত এসপিও ছিলেন সিং।

আরও পড়ুন: ‘১ বছর ৭ মাস জেলে আছেন, আর কতদিন?’, পার্থর জামিন মামলায় এবার বিরাট নির্দেশ হাই কোর্টের

মঙ্গলবার পাঞ্জাবের একটি সংবাদমাধ্যমে এই প্রসঙ্গে মুখ খোলেন আইপিএস। তিনি বলেন, ‘এর আগে পশ্চিমবঙ্গে আমি কখনও এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এমন অসংসদীয় শব্দ আমি কখনও শুনিনি। শুভেন্দু অধিকারীরা যখন ধামাখালিতে পৌঁছয় তখন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। ফলে তারা সন্দেশখালিতে ঢুকতে পারবেন কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। সেই সময় হঠাৎই একজন আমাকে দেখে খালিস্তানি শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। আমিও তার জবাব দি।’ আমিই সেখানে একমাত্র শিখ অফিসার ছিলাম। আমার পাগড়ি দেখে এমন কুমন্তব্য করা অসংসদীয় ও তা ভারতীয় দণ্ডবিধিতে তা বেআইনি।’

এদিকে ঘটনার পর মঙ্গলবারই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘জনৈক পুলিশ অফিসার যসপ্রিত সিংকে ‘খালিস্তানি’ বলে আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা। বিরোধী দলনেতা এমন কোনও মন্তব্য করতে পারেন না যা একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের ভাবাবেগকে আঘাত করে। এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আইনি যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।’’

suvendu x

‘খালিস্তানি’ মন্তব্যের জেরে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে শিখ সম্প্রদায়। মঙ্গলের পর বুধবারও রাজ্য বিজেপির দফতরের বাইরে বিক্ষোভ দেখান শিখ সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। বিজেপিকে সাঁড়াশি আক্রমণে নেমেছে আপ-কংগ্রেস। খালিস্তানি মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন শিখ সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর