ভারতবর্ষ স্বাধীন হলেও দেশের সমাজ এখনও ভাষা, পোশাক ইত্যাদি কিছু দিক থেকে পরাধীন হয়ে রয়েছে। ভাষার অবস্থা এমন যে এখন দেশে নিজের ভাষার থেকে বিদেশী ভাষা ইংরেজির গুরুত্ব বেশি। ভারতের (India) গর্ব হিসেবে পরিচিত সংস্কৃত ভাষা (Sanskrit) তো প্রায় লুপ্ত হওয়ার পথে। তবে বর্তমানের যুব সমাজের একাংশ সংস্কৃত ভাষার পুনরুত্থানের জন্য সমস্ত শক্তি দিয়ে নেমে পড়েছে। এর মধ্যে এক এক যুবকের নাম বেশ চর্চায় আসছে যিনি সংস্কৃত ভাষাকে এক অন্যরূপে পেশ করছেন যাতে সংস্কৃত ভাষার প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই যুবকের নাম হলো সুশান্ত রত্নাপারখী, যিনি মুম্বাইতে বসবাস করেন। ইনি সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে সংস্কৃত ভাষার উত্থানে নেমে পড়েছেন। ইনি রি-সংস্কৃত নামের একটা ওয়েবসাইট খুলেছেন। সাথে একটা ইন্সট্রাগ্রাম পেজও চালান। ইনস্টাগ্রামের পেজে সুশান্ত সংস্কৃত ভাষায় লেখা সুবিচার পোস্ট করেন। সে ক্ষেত্রে পেজে মানুষের একটা ইতিবাচক পতিক্রিয়া পাওয়া যায়। সুশান্ত এর কাজ মানুষজন খুবই পছন্দ করেন। ওই পেজে ১ লক্ষ ৭০ হাজারেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছেন। লক্ষণীয় বিষয় এই যে, পেজটির কোনো পেড প্রমোশন করা হয়নি। মানুষজন সাধারণ আকর্ষণেই পেজটিকে পছন্দ করেছেন। এছাড়াও ওয়েবসাইটেও সুশান্ত সংস্কৃত ভাষার প্রমোটের একটা ভালো রাস্তা বের করেছেন।
ওয়েবসাইটের মধ্যে সুশান্ত ই-কমার্স এর মতো করে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করেন যাতে সংস্কৃত ভাষার প্রচার করা হয়। টি-শার্ট, ফোন কভার বিক্রি করলেও সেখানে সংস্কৃত ভাষাকে প্রমোট করা হয়। বাণিজ্যিক দিক থেকে বিষয়টিকে না দেখলে এটা যে দেশের গর্বকে বাঁচিয়ে রাখার একটা বড়ো প্রচেষ্টা তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। রি-সংস্কৃত ওয়েবসাইটে প্রতিমাসে ১ লক্ষ মানুষ ভিজিট করেন বলে জানিয়েছেন সুশান্ত। উনি বলেছেন, আগামী সময়ে উনি সংস্কৃত ভাষার জন্য আরো কাজ করবেন। অন্যদিকে দেশের মানুষ এই কাজেটিকে বেশ পছন্দসহকারে নিচ্ছেন। যার কারণে উনি কাজের প্রতি ভালো উৎসাহও পাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত জানিয়ে দি, রামায়ণ, মহাভারতের সময়কাল থেকে ভারতে সংস্কৃত ভাষার প্রচলন সম্পর্কে শোনা যায়। বর্তমানে ভারতে যত ভাষার প্রচলন রয়েছে প্রত্যেকটি সংস্কৃতি ভাষা থেকেই এসেছে। এই কারণেই সংস্কৃত ভাষাকে অনেকে সমস্থ ভাষার জননী বলে থাকে। সংস্কৃত ভাষার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভাষাটির প্রাচীন হওয়ার সাথে সাথে বেশ প্রভাবশালী। বৈজ্ঞানিক গবেষণা অনুযায়ী, একজন নিয়মিত সংস্কৃত পড়ুয়ার মস্তিষ্কের শক্তি অন্য যেকোনো ভাষী পড়ুয়ার থেকে অবশ্যই বেশি হবে। তবে বিড়ম্বনা এই যে, ভারতে এখন সংস্কৃতি ভাষার ব্যাবহার শুধুমাত্র ভারতের পূঁজা অর্চনা, বিয়ে ইত্যাদি কিছু আনুষ্ঠানিক কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েগেছে