বাংলা হান্ট ডেস্ক : প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পুজো করা নিয়ে তুলকালাম। এবার অশান্তি শুরু হল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভিতরেই। এক দল চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলে, ‘পুজো করে দেখিয়ে দেব’। অপর দলের দাবি ‘এই জেদ অশোভন’। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে (Presidency University) সরস্বতী পুজো করতে চাইছে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি (TMCP)-র সংগঠন। এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুজো করতে চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে চিঠি লেখে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। কিন্তু পুজো করার অনুমতি দেয়নি কর্তৃপক্ষ। তা নিয়েই ক্ষুব্ধ প্রেসিডেন্সির টিএমসিপি রবিবার একটি পোস্ট করে তাদের ফেসবুক পেজে। দীর্ঘ সেই পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের সমালোচনার পাশাপাশি পুজো করে দেখিয়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জও জানানো হয়।
তারা হুমকি দিয়ে বলে, ‘প্রয়োজন হলে প্রেসিডেন্সির গেটের বাইরেই সরস্বতী পুজো হবে।’ এই পরিস্থিতিতেই উল্টো সুর শোনা গেল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদকের একটি টুইটারে। সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখার একটি অংশকে উদ্ধৃতি করে তিনি পুজোর ব্যাপারে জেদ না করার পরামর্শ দেন। প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজো করা নিয়ে এখন টিএমসিপি-র অন্দরের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যেই চলছে।
প্রেসিডেন্সি কলেজের ভিতরে কোনও দিনই সরস্বতী পুজো হয়নি। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নেই বরাবর এই সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়টি নিয়েই এবার প্রশ্ন তোলে প্রেসিডেন্সির টিএমসিপি-র। তাঁদের অভিযোগ, বাম ছাত্র সংসদের চাপে ভয় পাওয়া কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষতার যুক্তি দেয়। সেই রীতি ভেঙেই ‘পুজো করে দেখিয়ে’ দিতে চায় পিইউটিএমসিপি। এর পরই টিএমসিপি-র রাজ্য সম্পাদক সুপ্রিয় চন্দ্র রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে এক টুইট লেখেন, ‘হঠাৎ সেখানে প্রতিমা পূজা করার জন্য জিদ অশোভন। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।’
এই প্রসঙ্গে সুপ্রিয় চন্দ্র জানান, ‘দ্বন্দ্ব বলে কিছু নেই। ওটা আপনাদের মনে হচ্ছে। আমার মনে হয় না। দুটো আলাদা মত থাকতেই পারে। এটাই তো গণতন্ত্র। দলের ভিতরেও আমরা নিজেদের মতামত রাখি। আমি প্রেসিডেন্সির ছাত্র হিসাবে কখনও দেখিনি। এখানকার ঐতিহ্যও রয়েছে। পরিচালনার সমিতির সঙ্গে একই রকমের সমস্যার প্রেক্ষিতেই রবীন্দ্রনাথের ওই কথা লেখা।’ রবীন্দ্রনাথের যে লেখা থেকে উদ্ধৃত করেছেন সুপ্রিয় তাতে লেখা- ‘সিটি কলেজ ব্রাহ্মদের, এবং ব্রাহ্মরা প্রতিমাপূজক নহেন, এ-কথা প্রত্যেক ছাত্রই জানেন। কলেজ প্রতিষ্ঠার ৫০ বৎসর পরে হঠাৎ সেখানে প্রতিমা পূজা করার জন্য জিদ অশোভন।’