বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এল কর্ণাটক (Karnataka) থেকে। জানা গিয়েছে, সেখানে পেঁয়াজ বিক্রি করতে গিয়ে রীতিমতো কালঘাম ছুটে গেল একদল কৃষকের। শুধু তাই নয়, পেঁয়াজ বিক্রির পর মোট লাভের পরিসংখ্যান জেনেও চমকে উঠবেন সকলে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কর্নাটকের গডগ জেলা থেকে একসাথে ৫০ জন কৃষক প্রায় ৪১৫ কিলোমিটার অতিক্রম করে বেঙ্গালুরুর যশবন্তপুর বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করতে এসেছিলেন।
কিন্তু, সেখানে এসে তাঁরা জানতে পারেন যে, প্রতি কুইন্টাল পেয়াঁজের দর উঠেছে মাত্র ২০০ টাকা। স্বাভাবিকভাবেই এত কম দাম শুনে হতাশ হয়ে পড়েন তাঁরা। যদিও, এত দূর থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসার কারণে একজন কৃষক সেখানেই তা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু, তারপরে লাভের অঙ্ক দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় তাঁর।
গডগের তিমাপুর গ্রামের কৃষক পাওয়াপেড্ডা হাল্লিকেরি প্রায় ২০৫ কেজি পেঁয়াজ বিক্রির জন্য এনেছিলেন। এমতাবস্থায়, তাঁর পেঁয়াজের মোট দর উঠেছিল ৪১০ টাকা। এদিকে, কুলির খরচবাবদ তাঁর খরচ হয় ২৪ টাকা। শুধু তাই নয়, পরিবহণ খাতেও তাঁকে দিতে হয় ৩৭৭ টাকা ৬৪ পয়সা। এমতাবস্থায়, পেঁয়াজ বিক্রির পর হিসেব করে দেখা যায় যে ওই কৃষকের লাভের পরিমান হল মাত্র ৮ টাকা ৩৬ পয়সা।
হ্যাঁ, তিনি ২০৫ কেজি পেয়াঁজ বিক্রি করে ওই পরিমান টাকাই লাভ করেন। এদিকে, পেঁয়াজ বিক্রির সেই বিলটি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন ওই কৃষক। যা তুমুলগতিতে ভাইরাল হতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, চলতি বছরে পেঁয়াজের এত কম দর ওঠায় কৃষকরা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। পাশাপাশি, ফসলের ভালো দাম পাওয়ার আশায় তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন। মূলত, চলতি বছরে প্রবল বৃষ্টির কারণে চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়।
এই প্রসঙ্গে হাল্লিকেরি জানিয়েছেন, “বৃষ্টির কারণে চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পেঁয়াজের আকার বড় হয়নি। কিন্তু তা বলে এত কাম দাম উঠবে, সেটা ভাবতে পারিনি।” পাশাপাশি, তিনি আরও জানান, “সাধারণত পুণে, তামিলনাড়ু থেকে কৃষকরা ভালো দামের আশায় যশবন্তপুরের বাজারে তাঁদের ফসল বিক্রি করতে আসেন। সেক্ষেত্রে প্রতি বছরই ভালো দাম পাওয়া যায়। কিন্তু চলতি বছর এত কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি হবে তা বুঝতে পারিনি।”
হাল্লিকেরির মতে, পেঁয়াজ চাষ করা থেকে শুরু করে যশবন্তপুর বাজারে নিয়ে আসা পর্যন্ত তাঁর মোট ২৫ হাজারেরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। এমতাবস্থায়, পেঁয়াজ বিক্রির পর সব খরচ বাদ দিয়ে দেখা যায় যে, তাঁর ৮ টাকা ৩৬ পয়সা লাভ হয়েছে। যার জেরে রাজ্যের অন্যান্য চাষিদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করতেই তিনি ওই বিলটি নেটমাধ্যমে শেয়ার করেছেন বলেও জানিয়েছেন।