বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে পড়শি দেশ পাকিস্তান (Pakistan)। কিছুতেই এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না ওই দেশ। পাশাপাশি, IMF (International Monetary Fund) তথা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কঠোর শর্তের সঙ্গেও লড়াই করতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। ঠিক এই আবহেই এবার একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই পাকিস্তান সমস্ত সরকারি কোম্পানি বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত মঙ্গলবার ইসলামাবাদে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই সংক্রান্ত ঘোষণা করেন। সেখানে তিনি বলেন, “ব্যবসা করা সরকারের কাজ নয়। বরং, সরকারের কাজ হল দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা।” পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন যে, সরকারি সব কোম্পানি বিক্রি করে দেওয়া হবে। এমতাবস্থায়, মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, সরকার শুধুমাত্র সেই কোম্পানিগুলিতে কাছে রাখবে যেগুলি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, পাক সরকারের সূত্র অনুযায়ী, ওই দেশে ৮৮ টি সরকারি কোম্পানি রয়েছে। যেগুলি প্রত্যেকটাই এখন খারাপ অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি, দেশের GDP-তে ওই সংস্থাগুলির ৪৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রথম ধাপে ২৪ টি কোম্পানি বিক্রি করা হবে। যেগুলির তালিকা ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই তালিকায় রয়েছে পাকিস্তানের ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স। এই কোম্পানির বিক্রির প্রক্রিয়া টিভিতে লাইভ টেলিকাস্ট করা হবে।
আরও পড়ুন: “আমার মতো ভালোবাসা কেউ পায়নি”, আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানিয়ে আবেগে ভাসলেন সুনীল ছেত্রী
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, বর্তমানে পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে দেশের মধ্যে থাকা কোনো উদ্যোগপতি প্রতি অথবা ধনকুবের এই কোম্পানিগুলি কেনার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন না। আর সেই কারণেই পাকিস্তান সরকারকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, কাতার, সৌদি আরবের মতো দেশ থেকে ক্রেতার খোঁজ করতে হচ্ছে। মূলত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের চাপেই শেহবাজ শরীফকে এহেন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গুলিতে এফোঁড়-ওফোঁড়! চলে গেলেন সচিনের “কাছের মানুষ”, তদন্তে নামল পুলিশ
কয়েকদিন আগেই, IMF-এর টিমের সাথে বৈঠক হয় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর। যেখানে শেহবাজ ৩ বিলিয়ন ডলারের বিপুল ঋণ মেটানোর জন্য এই কোম্পানিগুলি বিক্রি করার পরিকল্পনা জানিয়েছিলেন। আর এই পরিকল্পনাতেই সম্মতি দেয় IMF। এদিকে, লন্ডনে স্থিত এক আর্থিক বিশ্লেষক জানিয়েছেন যে, পাকিস্তানের সরকারের কাছে বর্তমানে তার দায়িত্ব মেটানোর জন্যও কোনো অর্থ নেই। পাশাপাশি, তাদের কাছে দেশের অভ্যন্তরীণেও কোনো ক্রেতা নেই। আর সেই কারণেই, প্রাইভেটাইজেশন প্রোগ্রাম ২০২৪-২৯-এর মাধ্যমে সবথেকে প্রথমে পাক এয়ারলাইন্স বিক্রি করা হবে। এদিকে, যে ২৪ টি কোম্পানিকে প্রথম ধাপে বিক্রি করা হবে সেগুলির মধ্যে অধিকাংশই রয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বিতরণ সেক্টর। এর পাশাপাশি, নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে থাকা রুজভেল্ট হোটেল এবং দু’টি বিমা কোম্পানিও বিক্রি করা হবে বলে জানা গিয়েছে।