বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তিন দিনের জন্য দীঘা সফরে গিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই সফর চলাকালীন সময়েই দীঘার জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে সময় তাঁর সঙ্গেই ছিলেন ইসকনের রাধারমণ দাস (Radharaman Das)। প্রসঙ্গত বিগত কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভু দাসের গ্রেফতারি নিয়ে তোলপাড় বাংলাদেশ।
মমতাকে বেলাগাম আক্রমণ শুভেন্দুর (Shuvendu Adhikari)
যার আঁচ এসে পড়েছে এপার বাংলাতেও। এই ঘটনায় বিগত কয়েক দিনে একাধিকবার টিভি চ্যানেলে সরব হয়েছিলেন ইসকনের প্রভু রাধারমণ দাসও। এমনকি ইসকন মন্দিরে প্রতিবাদের আয়োজনও করেছিলেন তিনি। সেখানে বাংলাদেশের চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিও করা হয়েছিল। পাশাপাশি বাংলাদেশে ইসকন মন্দির নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন রাধারমণ।
তাই এহেন রাধারমণ দাসকে দিঘা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দেখেই এবার রীতিমতো ফুঁসে উঠলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Shuvendu Adhikari)। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেছেন, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরকে নকল করে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীঘাতে যে মন্দির বানাচ্ছেন তা ভন্ডামি। তাই মুখ্যমন্ত্রীর পাশে রাধারমণ দাসকে দেখে নাকি তাঁর নিজেরই লজ্জা হচ্ছে।
প্রায় শেষ লগ্নে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের কাজ। ইতিমধ্যেই মন্দির উদ্বোধনের দিন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরইমাঝে একযোগে মমতা এবং রাধারমণ দাসকে আক্রমন শানিয়ে শুভেন্দু (Shuvendu Adhikari) এদিন বলেন, ‘আমার লজ্জা লেগেছে, মাননীয় রাধারমণ দাসকে দেখে। শ্রীলা প্রভুপাদ ইসকন তৈরি করেছিলেন চৈতন্য দেবের ভাবধারায়। তিনবারের বেশি পুরীতে গিয়েছিলেন চৈতন্য দেব। রথযাত্রার মাধ্যমেই পুরীধাম নিয়ে চৈতন্য দেবের কথা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়াতে আপত্তি করলেন না কেন? মমতা তো চৈতন্য দেব, শ্রীলা প্রভুপাদ-র ভাবধারাকে অপমান করেছেন। আর আপনি তার সাক্ষী থাকলেন?’
আরও পড়ুন: ‘রাজ্য নিজেই নিজের সম্মান হারাচ্ছে..,’ বিরাট পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের
এখানেই শেষ নয় মন্তব্যের ঝাঁঝ বাড়িয়ে শুভেন্দু (Shuvendu Adhikari) এদিন আরও বলেন, ‘সাংবিধানিকভাবে কোনও সরকার এক্সচেকারের টাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজও যা যা বলেছেন সেটা ভণ্ডামি আর মিথ্যাচার। আমিও জগন্নাথ দেবের ভক্ত। তাই বলতে চাই, চারধামের একধাম পুরী ধাম। একে নকল করার অধিকার কোনও হিন্দু আপনাকে দেয়নি। কেদার–বদ্রীর বিকল্প হয় না, গীতাকে পালটানো যায় না। অভিনন্দনকে শুভনন্দন করতে পারেন। কিন্তু পুরী ধামের নকল মন্দির করার সাহস পান কোথা থেকে?’
এরপরেই শুভেন্দুকে (Shuvendu Adhikari) আক্রমণ শানাতে আসরে নামেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ। তিনি পাল্টা দিয়ে বলেন, ‘ বিরোধী দল নেতার ঈর্ষা হচ্ছে। দিঘার জগন্নাথ মন্দির তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। মুখ্যমন্ত্রী তা দেখতে গিয়েছেন, সেই জগন্নাথ দেবের মন্দির নিয়েও কটাক্ষ। এত ঈর্ষা কীসের?’ এরপর কুনাল আরও বলেন, ‘বাংলার যা আকর্ষণ তাতে এই তীর্থক্ষেত্র গোটা পৃথিবীর কাছে রাজ্যের মাথায় নতুন পালক যোগ করবে। এত ঈর্ষা কীসের? এই রাজ্যে ধর্ম যার যার উৎসব সবার। জগন্নাথ দেবের সুন্দর মন্দিরকরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।এসব দেখে আপনাদের কি গায়ে ফোসকা পড়ছে? বিরোধী দলনেতার ছেলেমানুষী এসব। ওরা বাংলার গর্ব সহ্য করতে পারছে না।’