বাংলাহান্ট ডেস্ক : মুখ্যমন্ত্রীর পাড়া থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে আক্রান্ত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। হাজরা- কালিঘাট চত্ত্বরকে মমতার খাস তালুক বললে ভুল হয়না মোটেই। এবার সেই হাজরাতেই পুলওয়ামা দিবসে শহীদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ব্যপক বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল শুভেন্দুকে। যার জেরে রীতিমতো মেজাজ হারালেন এই বিজেপি নেতা।
সোমবার দুপুর নাগাদ হাজরার আশুতোষ কলেজের সামনে শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান শুভেন্দু অধিকারী। অভিযোগ সেখানেই তাঁকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। স্লোগান দেওয়া হয় তাঁর বিরুদ্ধে। শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীর নামেও স্লোগান ওঠে। এরপরই মেজাজ হারিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ুয়াদের দিকে এগিয়ে যান তিনি। যার জেরে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
নিরাপত্তারক্ষীরা উত্তেজনা দেখে তড়িঘড়ি ছুটে যান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে। শুভেন্দুকে নিরাপদে গাড়িতে তুলে দেন তাঁরা। এই ঘটনায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, তিনি ওই অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে সেখানেই তাঁকে ঘিরে ফেলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা। সেখানে তাঁর বাবার নাম করেও স্লোগান দিতে থাকে পড়ুয়ারা। আর এরপরই মেজাজ হারিয়ে ফেলেন তিনি।
বাবাকে নিয়ে ওঠা স্লোগান শোনামাত্র গাড়ি থেকে নেমে পড়েন শুভেন্দু। ‘কাকে বলছ এটা? কাকে বলছ’ এই কথা বলে তাঁকে ছাত্রদের দিকে তেড়ে যেতেও দেখা যায়। এক পুলিশ কর্মীকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগও উঠছে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁকে সেখান থেকে কোনো মতে বের করে আনলেও তখনও শান্ত হয়নি তাঁর রাগ। গাড়িতে বসে বসেই জানলা দিয়ে মুখ বার করে পড়ুয়াদের ধমকাতে থাকেন তিনি।
পুলওয়ামা দিবসে শহীদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে এক অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলাম ভবানীপুর থানার অন্তর্গত আশুতোষ কলেজ মোড়ে।
পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা এমন তলানি তে পৌঁছেছে যে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় ওনার পোষিত তৃণমূলী গুন্ডারা আমাকে শারীরিক নিগ্রহ করতে আসে।— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) February 14, 2022
পরে পুরো ব্যাপারটি নিয়ে নিজের ক্ষোভ ট্যুইটারে উগরে দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এদিন ট্যুইট করে তিনি লেখেন, ‘পুলওয়ামা দিবসে শহীদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে এক অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলাম ভবানীপুর থানার অন্তর্গত আশুতোষ কলেজ মোড়ে। পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা এমন তলানি তে পৌঁছেছে যে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা এলাকায় ওনার পোষিত তৃণমূলী গুন্ডারা আমাকে শারীরিক নিগ্রহ করতে আসে।’
কার্যতই আজকের এই ঘটনা বছর দুয়েক আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তৎকালীন বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়ের আক্রান্ত হওয়ার কথা মনে করিয়ে দেয়। সেখানেও একই ভাবে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল ছাত্রছাত্রীরা। চলে মারধরও। যদিও এই ব্যাপারে এখনও অবধি তথাকথিত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি তৃণমূলের তরফে। ঘটনার জেরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে হাজরা-কালিঘাট এলাকায়।