বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্য জুড়ে ভোটার তালিকা নতুন করে ঠিক করার কাজ চলছে। এই কাজের মাঝেই নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) নজরে কিছু অস্বাভাবিক বিষয় এসেছে। অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে, বহু ভোটারের নাম ২০০২ সালের শেষ ভোটার তালিকায় নেই। তবে সেই ভোটাররা ফর্ম পূরণ করার সময় বাবা-মা বা দাদু-ঠাকুরদার নাম লিখেছেন, যাঁদের নাম ২০০২ সালের তালিকায় ছিল।
কমিশনের (Election Commission) ভাষায় ‘প্রোজেনি ম্যাপিং’ কী?
এইভাবে আত্মীয়ের নাম দেখিয়ে ফর্ম জমা দেওয়ার পদ্ধতিকে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) বলছে ‘প্রোজেনি ম্যাপিং’। আর এই ধরনের ভোটারদের বলা হচ্ছে প্রোজেনি ভোটার।
কোথায় সমস্যা হয়েছে?
সব জায়গায় নয়। কিন্তু রাজ্যের প্রায় ১৪ হাজার বুথে, অর্থাৎ মোট বুথের প্রায় ১২ থেকে ১৫ শতাংশ বুথে, প্রোজেনি ভোটারের সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি হয়ে গেছে। অর্থাৎ, ওই বুথগুলিতে অর্ধেকেরও বেশি ভোটারের নাম ২০০২ সালের তালিকায় নেই। এই ছবি দেখে কমিশনের (Election Commission) মনে হয়েছে, বিষয়টি স্বাভাবিক নয়। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এই বুথগুলির তথ্য আবার নতুন করে যাচাই করা হবে।
কেন সন্দেহ তৈরি হল?
নির্বাচন কমিশনের (Election Commission) কাছে আগে থেকেই একটি হিসেব ছিল। ২০০২ সালের ভোটার তালিকা আর ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখা হয়েছিল। সেখানে দেখা যায়, রাজ্যের মোট ভোটারের মধ্যে ৬৬ শতাংশের নাম দুই তালিকাতেই আছে। মানে, সাধারণভাবে প্রতি বুথে ২০০২ সালের তালিকায় থাকা ভোটারের সংখ্যাই বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, অনেক বুথে উল্টো ছবি। একটি বুথে ৮০-৯০ শতাংশ ভোটারের নামই ২০০২ সালের তালিকায় নেই। এই অস্বাভাবিক সংখ্যাই প্রশ্ন তুলেছে।
কোন কোন জায়গায় এই ছবি সবচেয়ে বেশি?
বিশেষ করে সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে এই প্রোজেনি ম্যাপিং সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। যেমন – দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর ও কুলতলি, উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জ, উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ, মালদহের মালদহ সদর ও হবিবপুর। কিছু বুথে মোট ভোটারের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি ভোটার আত্মীয়ের নাম দেখিয়ে ফর্ম জমা দিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ আইনি জট কাটিয়ে বড় ঘোষণা! বাংলায় স্পেশাল টেটের ছাড়পত্র, খুলছে শিক্ষক নিয়োগের দরজা
এই সব তথ্য সামনে আসার পর নির্বাচন কমিশন (Election Commission) স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে যে, যেসব বুথে ৫০ শতাংশের বেশি প্রোজেনি ভোটার আছে, সেই সব বুথে বুথ লেভেল অফিসাররা (বিএলও) আবার নতুন করে তথ্য যাচাই করবেন। সব কাজ ১১ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে হবে। কমিশনের লক্ষ্য একটাই- ভোটার তালিকায় যেন কোনো ভুল বা অস্বাভাবিক কিছু না থাকে।












