বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘আমার নেত্রীর কথা মতোই ভোট দিয়েছি’, বললেন শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari)। পাল্টা ‘বিভ্রান্তিকর মন্তব্য’ বলে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)।
আজ গোটা দেশ জুড়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে সরগরম রয়েছে পরিস্থিতি। বাংলাতেও একের পর এক বিতর্ক ক্রমশ দানা বেঁধে চলেছে। এর মাঝে এদিন দিল্লিতে ভোট দিতে গিয়েছেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী এবং তাঁর পুত্র দিব্যেন্দু অধিকারী। সেখান থেকে বেরিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পিতা জানান, “প্রার্থী হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মু ভালো এবং যোগ্য। তবে আমার দল এবং দলনেত্রী যেরকম নির্দেশ দিয়েছেন, সে অনুযায়ী ভোট দিয়েছি।” একইসঙ্গে দিব্যেন্দু অধিকারী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী। আমি বিরোধী পদপ্রার্থীকে ভোট দিয়েছি।”
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ‘ক্রস ভোটিং’ উল্লেখ করে একাধিক মন্তব্য করা হতে থাকে। এদিন তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বিজেপির অনেক নেতা-নেত্রী যশবন্ত সিনহাকেই ভোট দেবেন।” সেই প্রসঙ্গে এদিন অধিকারী পরিবারের সদস্যদের ওপরেও নজর ছিল সকলের এবং পরবর্তীতে তাদের এহেন বক্তব্য বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। যদিও তাদের এই মন্তব্যকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন শিশির অধিকারীর মন্তব্যের পাল্টা হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “বিভ্রান্তিকর মন্তব্য। শেষ পর্যন্ত ওরা কাকে ভোট দিয়েছে, তা জানি। এসব কিছুই সাংসদ পদ রক্ষা করার জন্য করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই অধিকারী পরিবারের সদস্যরা কোন দলে রয়েছে, তা নিয়ে বিস্তর জল্পনা দানা বেঁধেছে। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করলেও তাঁর পিতা শিশির অধিকারী এবং ভাই দিব্যেন্দু অধিকারীর দলবদল নিয়ে সংশয়ে গোটা বাংলা। এর মাঝেই একদিকে যেমন একাধিক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে, আবার ইতিমধ্যে তাদের সাংসদ পদ খারিজ করার জন্য আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের পদ ধরে রাখার জন্যই এ সকল মন্তব্য বলে মনে করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
তবে এ প্রসঙ্গে শিশির অধিকারী জানান, “আমি তৃণমূলে ছিলাম, আছি এবং তৃণমূলেই থাকবো।” উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলার রাজ্যপাল পদে ইস্তফা দিয়েছেন জগদীপ ধনকড়। উপরাষ্ট্রপতি পদে কেন্দ্রের প্রার্থী হওয়ার পরই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাংলার পরবর্তী রাজ্যপাল কে হতে চলেছেন, তা নিয়ে জল্পনা উঠতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মহল থেকে শিশির অধিকারীর নাম উঠে এসেছে। তাঁর দিল্লিতে যাওয়া প্রসঙ্গে সেই জল্পনা আরো বৃদ্ধি পায়।
তবে এদিন এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি চিকিৎসা করানোর জন্য দিল্লিতে এসেছি। তবে কোন দায়িত্ব যদি আমাকে দেওয়া হয়, তা পালন করতে পারি।” এছাড়াও এদিন বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের প্রশংসা শোনা যায় শিশিরবাবুর গলায়। তাঁর দাবি, “রাজ্যপাল হিসেবে জগদীপ ধনকড় যথেষ্ট দক্ষ প্রশাসক ছিলেন। উপরাষ্ট্রপতি পদে জয়লাভ করলে সেখানেও তিনি তাঁর দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করবেন বলে আশা রাখছি।”