বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপি বাঁকুড়া জেলার শালতোড়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে এমন এক মহিলাকে প্রার্থী করেছে, যিনি এখন রাজ্য রাজনীতিতে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন। বিজেপির ওই প্রার্থীর নাম চন্দনা বাউরি (chandana bauri) আরও ওনার স্বামী একজন দিনমজুর। চন্দনা বাউরির স্বামী রাজমিস্ত্রীর কাজ করে দিনে ৪০০ টাকা উপার্জন করেন। মনোনয়ন দাখিল করার সময় চন্দনা বাউরি নিজের হলফনামায় জানিয়েছেন যে, ওনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এখন মাত্র ৬ হাজার ৩৩৫ টাকা আছে। আর ওনার স্বামীর অ্যাকাউন্টে ১ হাজার ৫৬১ টাকা আছে।
চন্দনা বাউরির হলফনামা অনুযায়ী ওনার মোট স্থাবর সম্পত্তি হল ৩১ হাজার ৯৮৫ টাকার। আর ওনার স্বামী শ্রাবণ বাউরির স্থাবর সম্পত্তি হল ৩০ হাজার ৩১১ টাকার। বিজেপির প্রার্থী চন্দনা আর ওনার স্বামী কোনও কৃষি জমির মালিক না। আর দিনমজুরি করেই তাঁদের সংসার চলে। চন্দনার স্বামী কাজে গেলে চন্দনাও ওনার সঙ্গে যান আর ওনার কাজে সহযোগিতা করেন। বাবা মারা যাওয়ার পর চন্দনা বাউরি বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেন নি। উনি মাত্র দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছেন। তবে উনি পড়াশোনায় ভালোই ছিলেন বলে জানা যায়। আর ওনার স্বামী অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়েছেন। চন্দনার কাছে ৩ টি ছাগল, ৩ টি গরু (একটি বাবার দেওয়া) আর একটি ছোট ঝুপরি আছে। স্বামী স্ত্রী দুজনের কাছে মনরেগার কার্ড আছে। বাড়িতে নিজস্ব শৌচাগারও নেই। ঘরের ভিতরেই থাকে গবাদি পশুরা।
চন্দনা আর শ্রাবণের তিনটি সন্তান আছে। দারিদ্র সীমার নীচে বাস করা চন্দনার বাড়িতে একটিও আসবাব পত্র নেই। কোনোরকম ভাবে ঝুপরিতে মাথা গুঁজে জীবনযাপন করতে হয় তাঁকে। চন্দনার স্বামী শ্রবণ বাউরি বিজেপির সক্রিয় কর্মী। বাঁকুড়ার শালতোড়া আসনটি এবছর তপশিলি জাতীদের জন্য সংরক্ষিত। আর সেই আসন থেকেই প্রার্থী হয়েছে চন্দনা। যদিও বিজেপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর তিনি জানতেনই না যে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। প্রতিবেশীদের থেকে তিনি জানতে পারেন যে, এবার শালতোড়া কেন্দ্রে তিনিই বিজেপির প্রার্থী।
জয়ের বিষয়ে আশাবাদী চন্দনা। বাড়ির কাজ সেরে দলের কাজে নেমে পড়েন তিনি। সকালে ঘুম থকে উঠে বাড়ির সমস্ত কাজ করে সন্তানদের পড়িয়ে প্রচার কাজে যায় চন্দনা। চন্দনা জানান, রাজ্য জুড়ে বিজেপির হাওয়া চলছে। গত লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ায় দুর্দান্ত ফল করেছিল বিজেপি। এবার বিধানসভা আসনেও করবে। চন্দনা জানান, বিধায়ক হয়ে তিনি দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াবেন। তাঁদের উন্নয়ন করাই চন্দনার প্রধান লক্ষ্য হবে।