বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতির (Congress President) দায়িত্ব নিতে নিমরাজি রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) তাহলে কে হবেন পরবর্তী সভাপতি।এই প্রশ্নই এতদিন তোলপাড় করেছে জাতীয় রাজনীতিকে। উঠে আসে দুটি সম্ভাবনার কথাও। প্রথমত, গান্ধী পরিবারের বাইরের কোনও নেতাকে সভাপতি পদে বেছে নেওয়া। আর অপরটি হল, অসুস্থ সনিয়া গান্ধীকেই (Sonia Gandhi) সভাপতি পদে পুর্নবহাল করা। এরই সঙ্গে গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন দু’জন নেতাকে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত করা।
কংগ্রেসের দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) শেষ পর্যন্ত রাজি না হলে দ্বিতীয় সম্ভাবনাটিকে নিয়েই দাবি জোড়ালো হবে। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, গান্ধী পরিবারের বাইরের কাউকে এই মুহূর্তে সভাপতি পদে মেনে নেওয়া সম্ভব হবে না দলের সমস্ত নেতা মন্ত্রীর পক্ষে। নরসিমহা রাও এবং সীতারাম কেশরীরা সভাপতি থাকাকালীন সময়ল সনিয়া কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য পর্যন্ত ছিলেন না। কিন্তু সদস্য পদ পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তিনি সভাপতির চেয়ারে বসেন কেশরীকে সরিয়েই। ১৯৯৮ থেকে ২০২২—এই ২৪ বছর ধরে গান্ধী পরিবারই কংগ্রেসের অভিভাবক। আর এই তথ্য তুলে ধরেই বিজেপি ‘কংগ্রেস মানে গান্ধী পরিবার’ বলে বার বার আক্রমণ করে আসছে। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, এই ২৪ বছরে কুশাভাও ঠাকরে থেকে জেপি নাড্ডা, মোট নয়জন বিজেপির সভাপতি হয়েছেন। সেখানে কংগ্রেসের মাত্র দু’জন সভাপতি হয়েছেন, সনিয়া ও রাহুল। দু’জনই গান্ধী পরিবারের সদস্য।
পরপর দু’টি লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়, বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কংগ্রেসের প্রথমসারির নেতাদের মধ্যে সনিয়া গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে খুব একটা সন্দেহ নেই। কিছুটা কানাঘুষো শোনা রাহুলকে নিয়ে। আবার সনিয়ার বিকল্প হিসাবে তাঁদের বেশিরভাগের পছন্দ কিন্তু রাহুলই। সব মিলিয়ে গান্ধী পরিবারের প্রতি আস্থা এবং আনুগত্যের প্রশ্নে কংগ্রেসের নেতারা ঐক্যবদ্ধ।
এবার প্রশ্ন ওঠে, সনিয়াকে সভাপতি পদে বহাল রেখে কাদের কার্যকরী সভাপতি করা যেতে পারে? জানা যাচ্ছে, দক্ষিণ এবং উত্তর ও মধ্য ভারত থেকে দু’জন নেতাকে বেছে নেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। দক্ষিণ ভারত থেকে উঠে আসছে তিনটি নাম—কেরলের কেসি বেণুগোপাল, রমেশ চেন্নিথালা এবং কর্নাটকের মল্লিকার্জুন খাড়গে। উত্তর ও মধ্য ভারত থেকে নাম রয়েছে অশোক গেহলট, অম্বিকা সোনি, কুমারি শৈলজা, মুকুল ওয়াসনিক, সচিন পাইলট। এঁদের মধ্যে গেহলট, অম্বিকা, মুকুল, শৈলজা এবং বেণু গোপাল ও খাড়গের নাম পরবর্তী সভাপতি পদের জন্যও আলোচনায় রয়েছে। একান্তই যদি সনিয়াও আর সভাপতি পদে থাকতে না চান, তখন এঁদের মধ্যে কাউকে বেছে নেওয়া হতে পারে।
সনিয়া গান্ধীকে সভাপতি পদে বহাল রাখার পিছনে যুক্তি হল, গান্ধী পরিবারের প্রতি দলের কর্মী সমর্থকদের সীমাহীন আস্থা। তবে পথে রয়েছে কাঁটাও। সনিয়া বা রাহুল যদি পাকাপাকিভাবে সভাপতি হন তাহলে ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকার সম্পত্তির মামলা যে কংগ্রেসকে ভালোই বেগ দেবে তা বলাই যায়।