বাংলাহান্ট ডেস্ক: সোনু সূদ (sonu sood), লকডাউনে এই নামটার সঙ্গে যেন নতুন করে পরিচিত হয়েছিল দেশবাসী। এমন নয় যে সোনুকে আগে কেউ চিনতেন না। অভিনেতা হিসাবে অত্যন্ত জনপ্রিয় না হলেও তাঁর পরিচিতির সঙ্গে ওয়াকিবহাল ছিলেন সকলেই। কিন্তু মহামারির সময় যেন সোনুর এক অন্য রূপের সঙ্গে পরিচিত হল মানুষ।
করোনা পরিস্থিতিতে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিককে কিভাবে নিজেদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়ে যখন তাবড় রাজনীতিবিদদের কপালে চিন্তার ভাঁজ, সেই সময়েই ত্রাতা হিসাবে এগিয়ে আসেন সোনু। তথাকথিত প্রথম সারির তারকা না হয়েও সম্পূর্ণ নিজের উদ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিজের বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন সোনু।
কিছুদিন আগেই করোনা মুক্ত হয়েছেন অভিনেতা। তারপরেই ফের নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। ফের একবার নিজের মহানুভবত্ব দেখিয়েছেন সোনু। অক্সিজেন যোগাড় করে ২২ জন করোনা রোগীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, রাতে হঠাৎ করেই বেঙ্গালুরুর আরাক হাসপাতালে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। বহু করোনা আক্রান্তের প্রাণ বাঁচানো দায় হয়ে পড়ে। এরপরেই সোনু সূদকে সমস্যাটি জানিয়ে ফোন করেন একজন পুলিস ইন্সপেক্টর। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই দুজন রোগী মারা গিয়েছেন অক্সিজেনের অভাবে। ঘটনাটি শোনার পরেই নিজের টিমকে নিয়ে কাজে নেমে পড়েন সোনু। তৎপরতার সঙ্গে কিছু সময়ের মধ্যেই ১৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করেন তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেন, “রাতে ফোনটা পেয়েই আমরা আগে পুরো ঘটনাটা যাচাই করি। তারপর সঙ্গে সঙ্গে কাজে লেগে পড়ি। যদি আর একটুও দেরি হত তাহলে অনেকেই তাদের প্রিয়জনকে হারাতে পারতেন। এই বিপদের দিনে আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর।” এই কাজে পুলিসও সোনুকে সাহায্য করেছে বলে খবর। তাদের উদ্দেশেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন সোনু।
সম্প্রতি সোনু আবেদন জানান, করোনা আক্রান্তদের শেষকৃত্য অন্তত বিনামূল্যে করার ব্যবস্থা করুক সরকার। অভিনেতার বক্তব্য, একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা থেকে শেষকৃত্য পর্যন্ত লম্বা সময়টা একের পর এক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এমন অবস্থায় মানুষগুলোর শেষকৃত্যটা অন্তত যাতে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন তার জন্য সরকারকেই দায়িত্ব নেওয়া উচিত বলে মত সোনুর।
এই প্রসঙ্গে অভিনেতা বলেন, তাঁর এক পরিচিত করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির শেষকৃত্যের জন্য শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও দেখা যায় বড়সড় অঙ্কের টাকা দাবি করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত মৃতদেহের সৎকারের জন্য লাইন পড়ে যাচ্ছে। আর প্রতিটা দেহের জন্য দাবি করা হচ্ছে ১৫-১৬ হাজার টাকা।
এত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা অনেকের নেই। তাই সোনুর আর্জি সরকার থেকে দায়িত্ব নিয়ে করোনা আক্রান্তদের বিনামূল্যে শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা উচিত। উপরন্তু যদি এর জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয় তবে রোগীর পরিবারের লোকেরাই তার শেষকৃত্য করতে পারবেন।