ইংরেজি মিডিয়ামের শিক্ষিত ছেলে হয়ে বারে গাইতেন গান, টলিউডের ভিলেন হয়েই মনে রয়ে গেলেন সৌমিত্র

বাংলাহান্ট ডেস্ক: সৌমিত্র বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় (soumitra bannerjee), টলিউডের চিরকালীন খলনায়কদের মধ‍্যে অন‍্যতম নাম। ছবির ভিলেনরাও যে জনপ্রিয় হতে পারে তা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন তিনিই। প্রত‍্যেকটি ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রতিভা প্রশংসিত হত দর্শক মহলে। আজ এত বছর পরেও সিনেপ্রেমীদের মধ‍্যে একই রকম সমাদৃত সৌমিত্র বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়, তা সে ভিলেন চরিত্রের জন‍্যই হন না কেন।

আশি এবং নব্বই দশকের বাংলা সিনেমায় ভিলেন চরিত্রের অন‍্যতম জনপ্রিয় মুখ ছিলেন সৌমিত্র। বেশিরভাগ চরিত্রেই নেগেটিভ চরিত্রের জন‍্য তিনিই ছিলেন পরিচালক প্রযোজকদের প্রথম পছন্দ। বহু সুপারহিট ছবিও উপহার দিয়েছেন তিনি দর্শকদের। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে অনায়াসে টক্কর দিতে পারতেন নায়কদের।

soumitra banerjee 7 RBN
তবে জনপ্রিয়তার এই পর্যায়ে পৌঁছানোটা কিন্তু অত সহজ ছিল না। কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে সৌমিত্রকে। প্রথমে অভিনয় জগতে আসার পরিকল্পনাই ছিল না তাঁর। বরং গায়ক হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। কিশোর কুমারের গান খুব ভাল গাইতেন। গায়ক হওয়ার ইচ্ছা নিয়েই কলকাতায় পা রেখেছিলেন সৌমিত্র। কিন্তু বিধাতার অন‍্য কিছু পরিকল্পনা ছিল।

কেরিয়ারের শুরুতে বারে গান গাইতেন সৌমিত্র। ইংরেজি মিডিয়ামে পড়া শিক্ষিত ছেলে শেষে কটা টাকার জন‍্য বারে গান গাইবে, মেনে নিতে পারেননি তাঁর বাবা মা। কিন্তু এই গানের দৌলতেই অভিনয় জগতের দরজা খুলে গিয়েছিল সৌমিত্রর জন‍্য। শুরু দিকে তেমন নজর কাড়তে না পারলেও ১৯৮২ সালে ‘ত্রয়ী’ ছবি বড় ব্রেক এনে দেয় তাঁকে। মিঠুন চক্রবর্তী ও দেবশ্রী রায়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছিলেন তিনি।

IMG 20210922 211054
ধীরে ধীরে পরিচালক প্রযোজকদের নজর কাড়তে শুরু করেন সৌমিত্র। মঙ্গলদীপ, গুরুদক্ষিণা, কথা দিলাম, হীরক জয়ন্তীর মতো ছবিতে অভিনয় করে মন জিতে নিয়েছিলেন সকলের। কিন্তু তাঁর একটাই আক্ষেপ ছিল, এমন কোনো চরিত্র পাননি যাতে অভিনয় করে সকলকে মাতিয়ে দিতে পারেন।

অভিনেতার জীবনের শেষের দিকটা বেশ করুণ। একটা সময় নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অভিনয়ও ছেড়ে দিয়েছিলেন সে সময়। রীতা কয়রালকে বিয়ে করলেও শেষমেষ বিচ্ছেদ হয়ে যায় দুজনের। এরপর আচমকাই ২০০০ সালে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে প্রয়াত হন সৌমিত্র বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়।

Avatar
Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর