বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এই কিছুদিন আগেরই কথা। সংসদে তসলিমা ইস্যুতে ঝড় তোলেন রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ তথা রাজ্যের প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। প্রতিবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে (Taslima Nasrin) কলকাতায় (Kolkata) সুরক্ষিতভাবে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে সরব হন তিঁনি। সেই নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল বঙ্গ রাজনীতিতে। এবার তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে বিজেপির নয়া কৌশল। বড় খবর সামনে আসছে।
এবার গেরুয়া শিবিরে তসলিমা? Taslima Nasrin
তসলিমা নাসরিন এবার বিজেপিতে! বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সব শিবির। এরই মধ্যে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ গেরুয়া দলের। মুসলিম ভোট টানতে এবার বিজেপির নতুন চাল। সূত্রের খবর, কিছুদিনের মধ্যেই তসলিমা নাসরিন বিজেপির হয়ে প্রচারে নামবেন পশ্চিমবঙ্গে। মুসলিম ভোট ব্যাংকের নয়া হিসাব। কিভাবে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিজেপি? শোরগোল শুরু।
একদিকে ওয়াকফ আইন নিয়ে উত্তাল বঙ্গ। এরই মধ্যে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিস্ফোরক খবর প্রকাশ্যে। বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে এবার রাজনৈতিক প্রচারে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে বিজেপি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে সামনে রেখে মুসলিম ভোটব্যাংকের উপর প্রভাব বিস্তার করার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে গেরুয়া শিবির।
বিজেপি তরফে সংসদে তসলিমা প্রসঙ্গত উঠতেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা জোড়ালো হতে থাকে। তসলিমা নাসরিনকে ফিরিয়ে এনে একদিকে সংখ্যালঘু ভোট আর অন্যদিকে অন্যদিকে এ রাজ্যের হিন্দুদের কাছেও বড় বার্তা দিতে চাইছে বিজেপি। এমনটাই মত সংশ্লিষ্ট মহলের। তসলিমা নাসরিন, যিনি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন এবং বাংলাদেশের মৌলবাদ বিরোধী অবস্থানের জন্য পরিচিত। সেই তাঁকেই যদি বিজেপি প্রচারের মুখ হিসেবে ব্যবহার করে, তাহলে যে সেটা নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ কৌশল হবে তা নিয়ে ভাবনার অবকাশ নেই।
রাজনৈতিক মহলের একাশের মতে, বিধানসভা ভোটের আগে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিজেপি মূলত তৃণমূল কংগ্রেসের মুসলিম ভোট ব্যাংকের একটি অংশ বিভক্ত করতে চাইছে। পাখির চোখ, সেই ৪-৫ শতাংশ ভোট, যা অনেক সিটে ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ভিডিও পড়ুন: https://youtu.be/ar9zG_xu5Rs?si=cyRsVvDU8URDipSm
আরও একটি সূত্রের খবর, বিজেপির এক অংশের পক্ষ থেকে সংসদে একটি আসন দাবি করা হয়েছে তসলিমার জন্য। এই প্রস্তাব তুলেছেন খোদ বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। প্রশ্ন উঠছে—এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য কি শুধু ভোটের সমীকরণ না কি এর পিছনে রয়েছে আরও গভীর রাজনৈতিক সংকেত?
উল্লেখ্য, বর্তমানে ভারতে রয়েছেন তসলিমা। দাবি উঠছে, গোপনে বিজেপির তত্ত্বাবধানে আছেন। যদিও এই বিষয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য এখনও আসেনি, তবে এই গুঞ্জনই যথেষ্ট আলোড়ন ফেলার জন্য। এই সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে একাধিক প্রশ্ন সামনে আনছে—এক, বিজেপি কি সত্যিই তসলিমা নাসরিনকে সামনে রেখে মুসলিম ভোট বিভাজনের খেলায় নামতে চলেছে? দুই, নাকি এই গোটা বিষয়টা শুধুই একটি রাজনৈতিক গিমিক?
আরও পড়ুন: ’১৫,০০০ মানুষ কাজ পাবে’! শালবনিতে তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস করে একাধিক ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি এই পরিকল্পনা বাস্তবে রূপ পায়, তবে এটি রাজ্য রাজনীতিতে এক প্রকার আইডিওলজিক্যাল সংঘর্ষের সূচনা করবে—যেখানে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং ভোট কৌশল একে অপরের মুখোমুখি হবে। এখন দেখার বিষয়, তসলিমা নিজে এই বিষয়ে কী অবস্থান নেন এবং বিজেপি আনুষ্ঠানিকভাবে কীভাবে এই বিষয়টিকে কবে বা কিভাবে সামনে আনে। সবটাই বোঝা যাবে সঠিক সময়ে।