বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত দু’বছরের বেশি সময় ধরে নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় শিরোনামে রয়েছে রাজ্য। এরই মধ্যে ২০১৬ সালের এসএসসি-র (SSC Recruitment Scam) সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করার নির্দেশ ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে কলকাতার রাজপথ। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এক ধাক্কায় চাকরি বাতিল হয়েছে ২৬০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার। তারই প্রতিবাদে ওই প্যানেল থেকে অযোগ্যদের নাম বাদ না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ডাক দিয়েছেন ‘২০১৬ যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর শিক্ষকেরা।
অযোগ্যদের (SSC Recruitment Scam) বাদ দেওয়ার দাবিতে বিরাট আন্দোলন শিক্ষকদের
কলকাতার ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে নিজেদের দাবি নিয়ে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন ২০১৬ সালের যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ইতিমধ্যেই এই মামলার (SSC Recruitment Scam) জল গড়িয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। আগামী ৭ জানুয়ারি এই মামলা শুনবে শীর্ষ আদালত। কলকাতার রাজপথে আন্দোলনরত শিক্ষকরা বর্ষবরণের রাতকে ‘ব্ল্যাক ডে’ হিসেবে পালন করেছেন। অযোগ্যদের ওই চাকরির প্যানেল থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে শুক্রবার একজন শিক্ষক মাথা মুড়িয়ে প্রতিবাদ করেছেন। একই সাথে এদিন তারা নিজেদের দাবি নিয়ে গিয়েছিলেন বিকাশ ভবনে।
শুক্রবার বেলা এগারোটা নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগণার রায়দিঘির সুভাষ নগর হাই স্কুলের শিক্ষক রজত হালদার মাথা ন্যাড়া করে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘২০১৬ সালের এসএসসি (SSC Recruitment Scam) পরীক্ষা দিয়ে বৈধ উপায় চাকরি পেয়েছিলাম এটাই কি আমাদের অপরাধ? কার দোষে এইভাবে আমাদের দিনের পর দিন পথে বসতে হবে? সমস্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কেন অযোগ্যদের এই প্যানেল থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না? আন্দোলনকারী অপর একজন শিক্ষক জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে সাবাল-জবাবের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের কোন দক্ষ আইনজীবী নেই। তাই তারা চাইছেন একজন দক্ষ আইনজীবী নিয়োগ করে সঠিক তথ্য সুপ্রিম কোর্টে তুলে দেওয়া হোক।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন সিবিআই এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নবম এবং দশমে ৮.৫০ শতাংশ অযোগ্য শিক্ষক রয়েছেন। একাদশ ও দ্বাদশের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা ১৪.৪৭ শতাংশ। তাই তারা প্রশ্ন তুলছেন কেন অযোগ্য প্রার্থীদের জন্য পুরো ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করা হবে? শিক্ষকরা জানিয়েছেন আগামী ৭ জানুয়ারি, যদি সুপ্রিম কোর্টেও এই মামলার (SSC Recruitment Scam) কোনো সুরহা না হয়, তাহলে তারপরেও তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না।
আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রী যেটা বলছেন ভুল বলছেন..,’ মমতার মন্তব্যে ফুঁসছে আলু ব্যবসায়ীরা
এক সপ্তাহ আগে এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলেছিল ২০১৬ সালের প্যানেল থেকে কি আদৌ যোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করা সম্ভব? এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার প্রশ্ন ছিল,’বৈধ-অবৈধ চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা কি আলাদা করা সম্ভব? সেই সাথে স্পষ্ট জানানো হয়েছে রাজ্য যদি বৈধ-অবৈধ চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা তৈরি করতে না পারে তাহলে কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে ২০১৬ সালের এসএসসি প্রার্থীদের পুরো প্যানেলটাই বাতিল করে দেওয়া হবে।
রাজ্যের আন্দোলনরত শিক্ষকরা তারই প্রতিবাদে শুক্রবার ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে অবস্থান বিক্ষোভের পাশাপাশি বিকাশ ভবন অভিযান চালিয়েছিলেন। একই সাথে এদিন তাঁরা বারোটা নাগাদ করুণাময়ী মোড় অবরোধ করেছিলেন। রাজ্যের শিক্ষকদের এই আন্দোলন প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার বিচার চলছে। তাই এই নিয়ে তিনি কিছু বলতে চান না। তবে তিনি দাবি করেছেন আন্দোলন করে হবে না। যারা যোগ্য তারাই চাকরি পাবেন।