বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত মাসে নিয়োগে দুর্নীতির (SSC Recruitment Scam) জেরে SSC ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে এক ধাক্কায় চাকরি হারান ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। দীর্ঘ চার মাসের শুনানি শেষে রায়দানের সময় ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি দেবাংশু বসাক তাঁর রায়ে বলেছিলেন চাল ও কাঁকর আলাদা করা যায়নি। এর আগে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও (Abhijit Ganguly) হাইকোর্টের রায়কে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন মুড়ি-মিছরি আলাদা করা যায়নি। তাই যোগ্য-অযোগ্য সকলের চাকরি গেছে। তবে এখানেই ব্যতিক্রমী সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
সুপ্রিম কোর্টে এই মানলার জল গড়ালে এখানেও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে স্কুল সার্ভিস কমিশন ও রাজ্য সরকার। মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি, অতিরিক্ত শুন্যপদ বানিয়ে চাকরি দেওয়ার বিষয়কে ‘সম্পূর্ণ জালিয়াতি’ বলেও মন্তব্য করেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। রাজ্যকে তীব্র ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। তবে কোনওভাবেই হাল ছাড়তে নারাজ সর্বোচ্চ আদালত।
গত মঙ্গলবার SSC মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, নিয়োগ তালিকা থেকে কি যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা সম্ভব? তা সম্ভব হলে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া তথা প্যানেল বাতিল করে দেওয়া ন্যায্য হবে না। এদিন শুনানির সময় সুপ্রিম এজলাসে উঠে আসে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও। চাকরিহারাদের আইনজীবী আদালতকে বলেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা উচিত।
চাকরিহারাদের ওই আইনজীবীর দাবি, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাকে রাজনীতিতে নামার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হোক। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম না করলেও রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন, একক বেঞ্চের বিচারপতি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন। একথা শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা মনে হয় আমাদের মামলার মূল বিষয়ে ফোকাস করা উচিত।’
আরও পড়ুন: বাদ পড়েছে ভুয়ো ভোটার! ছাপ্পা কমতেই বাংলায় কমেছে ভোটের হার, যা জানাচ্ছে নির্বাচন কমিশন!
এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “এই বিষয়টি যতই স্পর্শকাতর হোক বা রাজনৈতিক ভাবে ত্রুটিপূর্ণ হোক, এখানে আমাদের একমাত্র বিবেচনার বিষয় আইনি দিকটি। হাইকোর্টের বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে কিছুই হাসিল হবে না”। প্রধান বিচারপতির সংযোজন, “আমাদের পৃথক রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে, কিন্তু এখানে যা হওয়ার আইনগত ভাবেই হবে”। প্রসঙ্গত, গত শুনানিতে হাইকোর্টের চাকরি বাতিলের রায়ের ওপর স্থগিতদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৬ জুলাই।