বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান আধুনিক সময়ে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই একাধিক বিকল্প উপলব্ধ রয়েছে মানুষের কাছে। স্বাভাবিকভাবেই পেশাগত দিকেও সেই রেশ বজায় রয়েছে। তাই, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে একাধিক ব্যবসার পন্থা খুলে গিয়েছে সকলের সামনে। যার দ্বারা খুব সহজেই সম্ভব ভালো অঙ্কের রোজগারও। আর চাহিদা থাকার কারণে মানুষও আকৃষ্ট হচ্ছেন ব্যবসাগুলির প্রতি। কোয়েল পালনও ঠিক সেইরকমই একটি উপায় যার সাহায্যে প্রতি মাসেই বিপুল অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
বর্তমান প্রতিবেদনে ঠিক সেইরকমই এক ব্যবসার প্রসঙ্গ বিস্তারিতভাবে উপস্থাপিত করা হল। কোয়েল পালনের মধ্যে একদিকে পোলট্রির মাংসের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অন্যদিকে দেশি মুরগির মাংসের বিকল্পও খুঁজে পাওয়া যায়। যার জেরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কোয়েলের ডিম ও মাংসের চাহিদা। এই ব্যবসা মাত্র ৫০ হাজার টাকার বিনিময়েই শুরু করতে পারবেন ইচ্ছুকরা। এখন ভারতের প্রায় প্রতিটি অংশেই কোয়েল পালন লক্ষ্য করা গেলেও উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে এটি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়।
কেউ যদি কোয়েল চাষ শুরু করতে চান, তাহলে তিনি প্রথমে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে ৩০০০ টি কোয়েলের ছানা কিনতে পারেন। এগুলি ৩৫ দিন থেকে ৪০ দিনের মধ্যেই মোটামুটি বড় হয়ে যায়। পাশাপাশি, এগুলি বড় হয়ে গেলেই এর দাম পৌঁছে যায় প্রায় ৬০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি পিসেই ৫০ টাকারও বেশি লাভ করা সম্ভব।
এদিকে, এই ৩৫ থেকে ৪০ দিন যাবৎ বাচ্চাগুলিকে প্রস্তুত করতে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার খাদ্য লাগে। এইভাবে, আপনি যদি এই ব্যবসার মোট খরচ দেখেন, তাহলে তা ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকার মধ্যেই থাকে। তবে, এর মাধ্যমেই দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত লাভ করা যায় খুব সহজেই।
এমনিতেই এক বছরে ৯ থেকে ১০ টি চক্রে কোয়েল পালন সম্ভব। আর প্রতিক্ষেত্রেই দেড় থেকে দু’লক্ষ টাকার মুনাফা ঘটে। সুতরাং, আপনি যদি ৩৫ থেকে ৪০ দিনে গড়ে ১ লক্ষ টাকাও আয় করেন তাহলে বছরে প্রায় ১২ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খুব সহজেই উপার্জন করা সম্ভব। যার মধ্যে সমস্ত খরচ বাদ দিলেও মূল লভ্যাংশ থাকে প্রায় সাত থেকে আট লক্ষ টাকা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোয়েল পালন করে যে আপনি শুধু প্রচুর মুনাফা অর্জন করতে পারবেন তাই না, পাশাপাশি এটি স্বাস্থ্যের জন্যও খুব ভালো। এটি সহজপাচ্য এবং খেতেও খুব সুস্বাদু। এছাড়াও, শরীরের তাপমাত্রাও বজায় রাখে এগুলি। অনেক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, কোয়েলের মাংস খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেক বৃদ্ধি পায়।
এছাড়াও, আপনি কোয়েলের ডিমের ব্যবসাও করতে পারেন। কোয়েলের ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন এবং ফসফরাস থাকে। অর্থাৎ ডিমগুলি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। কোয়েল বছরে অন্তত ২৮০ থেকে ৩০০ টি ডিম পাড়ে। পুষ্টিগুণে ভরপুর হওয়ায় কোয়েলের ডিম অনেক দামে বিক্রিও হয়। যার ফলে এই ব্যবসা আপনাকে প্রচুর লাভ এনে দেবে।