পল মৈত্র,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ শ্রমিক সংগঠনের অসন্তোষের জেরে বন্ধের মুখে জেলার সর্ববৃহৎ তেল তৈরির কারখানা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর মহকুমার নারই এলাকার এই কারখানাতে বেতন বৃদ্ধির দাবি তুলেছিল কারখানার শ্রমিক সংগঠন। কিন্তু তা মানতে নারাজ কারখানার মালিক পক্ষ। দুইয়ের মধ্যে কোন রফা সূত্র না হওয়ায় হঠাৎ করে কর্মবিরতিতে চলে গিয়েছে শ্রমিক সংগঠন। যার জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে তেল তৈরিকরা সংস্থাটি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কৃষি নির্ভরশীল জেলা হিসেবেই পরিচিত। এই জেলায় নেই কোনও ভারী শিল্প। একটিমাত্র বেসরকারি সংস্থা জেলার বুকে কয়েকশো শ্রমিকদের নিয়ে বিগত কয়েক বছরধরে কারখানা চালিয়ে আসছে। এবার সেইটিও যদি শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে জেলায় শিল্পের শেষ সম্ভাবনাটাও নষ্ট হয়ে যাবে।
ওই বেসরকারি সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে জেলায় রাইস মিল গুলি বন্ধ থাকার কারণে কাঁচামাল সরবরাহ না থাকার কারণে তেল উৎপাদন হচ্ছে না। মাসের মধ্যে ১৫ দিন কারখানা চললেও শ্রমিকদের পুরো বেতন দেওয়া হয়েছে। কারখানায় দুটো উনিয়ন রয়েছে একটি আইএনটিটিইউসি ও অপরটি বামফ্রন্ট সমর্থিত। বর্তমানে তারা সমিলিত ভাবে কল্যাণী শ্রমিক সংগঠন করেছেন। তিন বছর পর পর শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে এই কারখানায়। এবারে সংস্থার পক্ষ থেকে বেতন বৃদ্ধি করা হলেও বামফ্রন্ট মনোনীত নকশালপন্থী সংগঠন কিছু শ্রমিক তা না মেনে কারখানার কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি করে সংস্থার অনুমতি ছাড়াই। কারখানার মালিক পক্ষ আলোচনার জন্য বসতে চাইলেও সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের বেতন বৃদ্ধিতে অনড় থেকে কর্মবিরতি চালাচ্ছে।]
কারখানার মালিক কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, ‘আমাদের কারখানার কিছু শ্রমিক এই ধর্মঘটের পক্ষে থেকে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা সংগঠনকে বার বার বলছি সমাধান সূত্র বার হোক আলোচনায় বসে, কাজ বন্ধ করে নয়। এমনিতেই সংস্থায় উৎপাদন বন্ধ হতে বসেছে। তা সত্ত্বেও কর্মীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধিতে রাজি হলেও নকশালপন্থী ট্রেড ইউনিয়ান সংস্থা কর্মীদের নিয়ে সমাধানের রাস্তায় না এসে কর্মবিরতি চালাচ্ছে। এতে করে শ্রমিকদের কর্মজীবন নষ্ট হচ্ছে। অনেক ভাবে আবেদন করেছি না শুনলে আমরা প্রশাসনের কাছে যেতে বাধ্য হব।’
অন্যদিকে ট্রেড ইউনিয়ান সেন্টার অফ ইন্ডিয়া নকশালপন্থী শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক অলীক চক্রবর্তী বলেন, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির পথে হাঁটতে চায় না সংস্থার মালিক। তিনি কোনও সমাধান সূত্রও রাজি নন। তাই আমরা শ্রমিকদের নিয়ে কর্মবিরতি করছি। জেলা তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মজিরুদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘আমি খুব শীঘ্রই কারখানায় যাব। আমাদের কোনও শ্রমিকরা কর্মবিরতি করলে তাদের কাজে যোগদান করে আন্দোলন করতে বলবো। কারখানা বন্ধ করে কোনও আন্দোলন আমরা মানব না। দরকার হলে প্রশাসনিক ভাবে সমস্যার সমাধান হবে।