পরীক্ষার বাইরে ১০ শতাংশ পড়ুয়া! নেপথ্য কারণ কী? যা বললেন সংসদ সভাপতি…

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রত্যেক বছরই উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে রাজ্যের স্কুলছুটদের (Dropouts) সংখ্যা। বিশেষ করে চলতি বছরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি স্কুলগুলোতে যে হারে স্কুলছুটদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তা রীতিমত ভয় ধরাচ্ছে। সদ্য সামনে এসেছে এক কেন্দ্রীয় রিপোর্ট, যেখানে দাবি করা হয়েছে দেশের অন্যান্য রাজ্য যেমন উত্তরপ্রদেশ,রাজস্থানের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে স্কুলছুটদের সংখ্যাটা অনেক বেশি।

উদ্বেগ বাড়াচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক (Higher Secondary) পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা

সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে কেন্দ্রের আরও একটি আশঙ্কাজনক রিপোর্ট। যা থেকে জানা যাচ্ছে, রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে টাকা পাওয়ার পর থেকেই স্কুল ছাড়তে শুরু করেছে একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা। ৭০ শতাংশ উপস্থিতির হার না হলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না জেনেও কোন হেলদোল নেই তাঁদের। এরই মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক (Higher Secondary) পরীক্ষার্থীদের নিয়ে সামনে এলো এক বড় আপডেট।

জানা যাচ্ছে, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক (Higher Secondary) পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা একধাক্কায় কমে গিয়েছে তিন লক্ষ। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপ করেনি দশ শতাংশ পড়ুয়া। মঙ্গলবার এমনটাই জানিয়েছেন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য (Chiranjib Bhattacharya)। কিন্তু এই দশ শতাংশ পড়ুয়াদের ফর্ম ফিলআপ না করার কারণ কি?

উচ্চ মাধ্যমিক (Higher Secondary) স্তরের এই দশ শতাংশ পড়ুয়াদের মধ্যেও স্কুলছুট হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে কিনা এবার তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীবের দাবি প্রত্যেক বছরে দশ শতাংশের মতো পরীক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকের ফর্ম ফিলাপ করেন না। এবারও তাই হয়েছে। তাঁর  মতে এই সংখ্যাটা স্কুলছুট হলেও হতে পারে। একই সাথে তিনি জানিয়েছেন ২০২৩ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অন্যান্য বছরের থেকে প্রায় তিন লক্ষ কম ছিল। এবার তারাই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তিন লক্ষ কম।

প্রত্যেক বছর সাধারণত মোট আট লক্ষ পরীক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক (Higher Secondary) পরীক্ষায় বসেন। এবছর সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ। তবে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কেন কম, তার ব্যাখ্যা মিললেও ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও প্রত্যেক বছর কেন ১০ শতাংশ পড়ুয়া ফর্ম ফিলআপ করছেন না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাংলার শিক্ষকদের একাংশ।

আরও পড়ুন: হবে ‘অ্যাকশন’! হঠাৎ নবান্নে জরুরি বৈঠক ডাকলেন মমতা, নির্দেশ মিলতেই হৈচৈ

তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ এই দশ শতাংশ পড়ুয়াদের ‘স্কুলছুট’ বলেই মনে করছেন। যদিও ছাত্র-ছাত্রীদের আরও বেশি করে স্কুল-মুখী করে তুলতে একাধিক সরকারি প্রকল্প চালু করা হয়েছে রাজ্যে। এমনকি পড়ুয়াদের পড়াশোনার সুবিধার জন্য একাদশ শ্রেণি থেকেই, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে তাদের হাতে ট্যাবও তুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে রাজ্যের স্কুলছুটদের সংখ্যা।

Higher Secondary

উঠে আসছে আরো একটি প্রশ্ন। তা হল যে সমস্ত দশ শতাংশ পড়ুয়া এ বছর ফর্ম ফিলআপ করেননি, তারা যদি পরের বছর উচ্চমাধ্যমিক দিতে চায়, তাহলে তারা কিভাবে পরীক্ষা দেবে? কারণ ২০২৬ সাল থেকেই সেমিস্টার ভিত্তিক মূল্যায়ন চালু হবে। তাহলে ফর্ম ফিলাপ না করা পড়ুয়ারা আবার পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ কি পাবে না? তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এ বিষয়ে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়েছেন এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এ বিষয়ে তাঁরা দ্রুত জানাবেন।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর