বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রায় দুমাস থেকে সংবাদ শিরোনামে সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলায় সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। তল্লাশি তো দূর, উল্টে ‘বেতাজ বাদশা’ শাহজাহানের অনুগামীদের হাতে মার খেয়ে এলাকা ছাড়া হন ইডি আধিকারিকরা। সেই থেকে শুরু, তারপর এখনও নেভেনি সন্দেশখালির আগুন। একে একে সামনে এসেছে নারী নির্যাতন, ধর্ষণের মত মারাত্মক সব অভিযোগ। বাংলার হটস্পটে পরিণত হয়েছে সন্দেশখালি। বাংলা তথা জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু উত্তর ২৪ পরগনার এই এলাকা। আর এসবের মধ্যে লাটে উঠেছে সন্দেশখালির বাচ্চাদের লেখাপড়া।
এই পরিস্থিতির মধ্যে কিভাবে পড়াশোনা করবে এলাকার কচিকাঁচারা? চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে মা-বাবাদের। তাই তো বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাদের ভিন জেলায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন তারা। পড়াশোনার তাগিদে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব মেদিনীপুরে চলে এসেছে একঝাঁক খুদে। মহিষাদলের নাটশালে একটি আবাসিক আশ্রম আপাতত ওই পড়ুয়াদের মাথা গোঁজার একমাত্র ঠিকানা। এলাকারই এক হাই স্কুলে সন্দেশখালির বাসিন্দা কয়েক জন কচিকাঁচাকে ভর্তিও করানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। সন্দেশখালির উত্তাপ থেকে দূরে মন দিয়ে হচ্ছে পড়াশোনা।
মহিষাদলের নাটশাল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গেঁওখালিতে রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম। ওই আশ্রমেও সন্দেশখালি থেকে আগত ন’জন পড়ুয়া ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আশ্রম সূত্রে খবর, সন্দেশখালির আরও অনেক পড়ুয়া ওই মিশনে থাকার আবেদন করলেও জায়গার অভাবে আর বাকিদের রাখতে ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি।
নাটশাল রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম তরফে জানানো হয়, সন্দেশখালিতে যে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের শাখা রয়েছে সেখানে থেকে দিন ১৫ আগে সেখানকার ন’জন ছাত্র এবং এক অভিভাবককে নাটশালে আসেন। তাদের সকলের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। বাকি আরও অনেকে আশ্রমে থাকার আবেদন জানালেও জায়গার অভাবে সকলকে ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব হয়নি বলেও জানানো হয়।
এই নিয়ে নাটশাল হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক বিপ্রনারায়ণ পণ্ডা জানান, “বর্তমান শিক্ষাবর্ষে সাত জন সন্দেশখালির ছাত্র টিসি নিয়ে এসে আমাদের স্কুলে ভর্তি হয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনে আবেদন অনুসারে আমরা ওদের ভর্তি করিয়েছি। ওই পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের পড়াশোনায় যাতে কোনও সমস্যার মুখে পড়তে না হয়, সেই দিকে আমরা খেয়াল রাখব।”
আরও পড়ুন: ‘মাছ ছোট নয়, আঁশ ছাড়ালে ওজন কমে’, নওসাদের দাবি খারিজ করে পাল্টা যুক্তি কারামন্ত্রী অখিল গিরির
সন্দেশখালি থেকে আসা পড়ুয়ারাও শান্তির পরিবেশে এসে বেজায় খুশি। এক ছাত্রের কথায়, “এলাকায় এত অশান্তি হচ্ছে। আমরা পড়াশোনা করতে পারছিলাম না। তাই বাবা-মা আমাদের এখানে পাঠিয়ে দিয়েছে। আমরা এখানে ভালই আছি। এখন থেকে এখানেই পড়াশোনা করব। “