বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষ যদি তার কাজের প্রতি সৎ এবং লক্ষ্যে স্থির থাকে, তবে একদিন না একদিন সে ঠিক সাফল্য অর্জন করবেই। আমাদের সামনে নানান সময় এরকম বেশ কিছু ব্যক্তির সাফল্য কাহিনী উঠে আসে যারা একক বলে এবং মানসিক জোরের মাধ্যমে শূন্য থেকে শুরু করে বর্তমানে নিজের ব্যবসাকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন।
গুজরাট বাসিন্দার সাফল্য কাহিনী
সম্প্রতি গুজরাটে এমনই এক ব্যক্তির কাহিনী উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, তিনি লন্ডন থেকে এমবিএ করে দেশে ফেরেন এবং বর্তমানে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে চলেছেন। তবে তাঁর শুরুটা একদমই ভালো হয়নি এবং কিভাবে ধাপে ধাপে সফলতা অর্জন করে চলেছে সেই ব্যক্তি, তার একটি চিত্র এদিন আপনাদের সামনে তুলে ধরবো আমরা।
আবর্জনার মাধ্যমে সাফল্য
গুজরাটের বাসিন্দা সন্দীপ ভাই প্যাটেল বর্তমানে তাঁর সংস্থা ‘নেপরা রিসোর্সেস’-এর মাধ্যমে দেশের বৃহত্তম ডিজিটাল শুষ্ক বর্জ্য ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছে। বর্তমান সময়ে তাঁর কোম্পানি প্রতিদিন প্রায় 560 টন শুকনো বর্জ্য পদার্থ হ্যান্ডেল করে থাকে। গুজরাটের এই ব্যক্তির কোম্পানি এখনো পর্যন্ত বিভিন্ন ইনভেস্টকারীদের কাছ থেকে 200 কোটি টাকারও বেশি টাকা সংগ্রহ করেছে।
ছাত্রজীবন থেকেই ব্যবসার স্বপ্ন
ছাত্রজীবনে লন্ডন থেকে এমবিএ পাশ করে ভারতে ফেরেন সন্দীপ। এছাড়া জানা গিয়েছে যে, কলেজে পড়াকালীন ব্যবসার প্রতি তাঁর প্রচন্ড আগ্রহ ছিল। বন্ধু এবং একাধিক আত্মীয়দের ব্যবসা করতে দেখে তার এই লাইনে ঝোঁক বাড়ে। তবে শুরুটা এতটুকুও মধুর হয়নি! প্রথমে ট্রাভেল এবং কেমিক্যাল ট্রেডিংয়ের ব্যবসা দিয়ে শুরু করেন তিনি এবং এরপরই মাথায় আসে শুষ্ক বর্জ্য ম্যানেজমেন্ট-এর ধারণা।
সকলের তাচ্ছিল্য সত্বেও নিজের লক্ষ্যে স্থির
তবে এই সংক্রান্ত ব্যবসাটি শুরু করলেও প্রথমে সবাই তাকে নিয়ে মজা করতে থাকে। অনেকেই বলতে থাকে যে, “বিদেশ থেকে এমবিএ করে আসার পরেও আবর্জনা নিয়ে কেন পড়লো সে?”
কিন্তু মানুষের এসকল কথাকে পাত্তা না দিয়ে নিজের কাজে মন দেন সন্দীপ ভাই প্যাটেল। তাঁর ব্যবসার জন্য বিনিয়োগকারীদের খুঁজতে থাকেন তিনি আর এরপরই ধীরে ধীরে তাঁর ব্যবসা ট্রাকে আসতে আরম্ভ করে। মাঝপথে অবশ্য বহু বিনিয়োগকারীদের দ্বারা প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হন সন্দীপ এবং একবার তো আগুন লাগার কারণে তাঁর সম্পূর্ণ ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু তাও হাল ছাড়েননি তিনি এবং কড়া পরিশ্রমের দ্বারা বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে সন্দীপের কোম্পানির টার্ন ওভার দাঁড়িয়েছে প্রায় 200 কোটিরও বেশি।
দৃষ্টান্ত স্থাপন সন্দীপের
তবে শুধু মাত্র এখানেই শেষ নয়, তাঁর এই উদ্যোগের ফলে লাভবান হয়েছে একাধিক মানুষ। যেখানে অতীতে আবর্জনা তোলার কাজে কর্মরত গুজরাটের একাধিক মানুষ মাসে তিন হাজারেরও কম টাকায় সংসার চালাতে বাধ্য হত, সেখানে বর্তমানে সন্দীপের কোম্পানিতে কাজ করে 8 হাজার টাকারও বেশি উপার্জন করেন করে চলেছে তার কর্মীরা। ফলে একটি ভালো উদ্যোগ যে শুধুমাত্র একজন নয় বরং গোটা সমাজের কল্যাণ করতে পারে, সেই দৃষ্টান্তই স্থাপন করে চলেছেন গুজরাটের সন্দীপ ভাই প্যাটেল।