বাংলাহান্ট ডেস্ক : মাটির ঘরে থেকে মোমবাতির আলোয় পড়াশোনা করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উত্তীর্ণ হয়ে বাবার মুখ উজ্জ্বল করলেন ছেলে। ছেলের সাফল্য চোখে জল দরিদ্র রাজমিস্ত্রি বাবার। মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার জঙ্গিপুরের মঙ্গলজোন এলাকার রাহুল সেখের ফলাফল দেখে চোখ কপালে উঠলো প্রতিবেশীদের।
রাহুলের বাবা হাসিবুল শেখ পেশায় রাজমিস্ত্রি আর মা গৃহবধূ। তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে সংসার চালান। পরিবারের দুরবস্থা সত্ত্বেও ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছেন দরিদ্র বাবা। সেই ছেলেই আজ সাফল্যের চূড়ায়। জানা গিয়েছে, রাহুল শেখ পঞ্জাবের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন।
আরোও পড়ুন : দারুণ খবর! এবার ভীষণ সস্তায় হবে সিকিম ভ্রমণ! একধাক্কায় কমছে গাড়ি ভাড়া, উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা
বর্তমানে তিনি পঞ্জাবে পিএইচডি করছেন। এই ছেলের সাফল্যে গর্বিত গোটা মুর্শিদাবাদ। পশ্চিমবঙ্গ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেখানেই ১২ নম্বর স্থানটি দখল করে নিয়েছেন রাহুল। হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা আলিগড় মুসলিম বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করা শেখ রাহুলের এই কৃতিত্বে গর্বিত পরিবার পরিজন থেকে শুরু করে গোটা মুর্শিদাবাদ।
আরোও পড়ুন : দু’দিনের বঙ্গসফরে এলেও রাজভবনে উঠছেন না মোদী, নেপথ্যে কী বোসের ‘শ্লীলতাহানি’ ইস্যু?
এক সময় বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না রাহুলের। তাই মোমবাতি আর হ্যারিকেন ছিল ভরসা। কয় বছর আগে বাড়িতে বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু হয়েছে। রঘুনাথগঞ্জের রাজমিস্ত্রির ছেলে রাহুল শেখ খুব শীঘ্রই এবার বিচারকের আসনে বসতে চলেছেন। প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কাজে যোগদান করবেন তিনি।
তবে আজ সাফল্যের চূড়ায় আসার যাত্রাপথ খুব একটা সহজ ছিল না।। ২০১৫ সাল থেকে জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা সম্পর্কে জানতে পারেন রাহুল। ২০২০ সালে প্রথমবার পরীক্ষা দিয়ে প্রিলিমিনারি, মেন্স এবং ইন্টারভিউ পর্ব পেরিয়ে এসে ওয়েটিং লিস্টের দ্বিতীয় স্থানে থাকেন তিনি। তবে সেবার স্বপ্ন ধরা দেয়নি।
২০২১ সালে তিন তিনটি ধাপ পেরিয়ে আবারও সামান্যর জন্য ওয়েটিং লিস্ট এর এক নম্বরের নাম ছিল রাহুলের। তবে ভেঙ্গে পড়েননি রাহুল। শুরু হয় পরবর্তী প্রস্তুতি। ২০২২ সালের প্রকাশিত ফলাফলের তালিকায় ১২ নম্বর স্থানে নাম রয়েছে রাহুলের। তাতেই খুশির হাওয়া গোটা গ্রাম জুড়ে। পঞ্জাবের সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি থেকে ২০২০ সালে আইন নিয়ে স্নাতকোত্তর হন রাহুল। বর্তমানে পাঞ্জাবে পিএইচডি করছেন তিনি।