বাংলাহান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে মেয়েদের স্বপ্নপূরণ করার পথে আসে হাজারো বাধা। কখনো তাদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় ছোট অবস্থায়, আবার কখনো তাদের শিকার হতে হয় গার্হস্থ হিংসার। ২৩ বছরের হামনা জাফরের সঙ্গে ঘটেছিল সেরকমই একটা ঘটনা। হামনার বয়স যখন সবে ১৯, তখন তার বাবা হামনার খুরতুতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এমনকি পরিবারের তরফ থেকে বাগদানের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যায়। তবে পরিবার এটাই সিদ্ধান্ত কিছুতেই মানতে পারেনি হামনা। হামনা চেয়েছিলেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার। জীবনে বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে হামনা এখন আমেরিকান সেনাবাহিনীর এক যোদ্ধা।
সম্প্রতি নিউইয়র্ক পোস্ট এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের খবর অনুযায়ী, আমেরিকার মেরিল্যান্ডে বসবাস করতেন হামনার বাবা-মা। তবে তারা কিছুতেই ওয়েস্টার্ন কালচারে নিজেদেরকে ভাসিয়ে দিতে চাননি। যেহেতু হামনা ছোটবেলা থেকে আমেরিকায় পড়াশোনা করেছেন ও বড় হয়ে উঠেছেন তাই তিনি ছিলেন স্বাধীনমনস্কা।
আরোও পড়ুন : ইঞ্জিন, ব্রিজ, টাওয়ারের পর এবার সিগন্যাল কেবল চুরি! বিহারে আড়াই ঘণ্টা ধরে ব্যাহত রেল পরিষেবা
একদিন তার বাবা-মা সিদ্ধান্ত নেন যে তাকে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু সেখানে পৌঁছে সে জানতে পারে যে তার বাগদান হয়ে গেছে। হামনা সেই সময় বারবার এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। কিন্তু কিছুতেই তার পরিবার তার স্বপ্নকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। এরপর হামনা বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নেন।
আরোও পড়ুন : ফের রক্তাক্ত পাকিস্তান, সেনা ঘাঁটিতে ভয়াবহ হামলা, মৃত অন্তত ২৩, এখনও চলছে শুটআউট
সেই সময় এক সেনাকর্তার বেশ সাহায্য পেয়েছিলেন হামনা। বেশ কিছুদিন হোটেলে কাটাতে হয় তাকে। এর মধ্যেই শুরু হয়ে যায় লকডাউন। ফলে ধীরে ধীরে টাকা শেষ হতে থাকে হামনার কাছে। এরপর তাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন তার বন্ধু ক্লডিয়া বারেরা। ক্লডিয়া বারেরা ও তার স্বামী হামনাকে সাহায্য করেন নিজের স্বপ্নে এগিয়ে যেতে।
এরপর দীর্ঘ সংঘর্ষের পর মার্কিন সেনাবাহিনীতে যোগদান করতে সক্ষম হন হামনা। এখন হামনা তার পরিবারের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে ইচ্ছুক। সে চায় তার পরিবার তাকে নিয়ে গর্বিত হোক। বহুবার হামনা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলেও পরিবারে তরফে সাড়া দেওয়া হয়নি। ক্লডিয়া বারেরার পরিবারেই এখন দিন কাটাচ্ছেন হামনা।