বাবার মৃত্যুর পর মায়ের সাথে কাজ করতে হয়েছে মাঠে! ১৯ বছরের লড়াই শেষে IAS হয়ে নজির গড়লেন ইনি

বাংলা হান্ট ডেস্ক: স্বপ্নপূরণের মাধ্যমে জীবনে (Life) সফল (Success) হওয়ার ক্ষেত্রে প্রত্যেককেই করতে হয় কঠিন পরিশ্রম। তবে, কিছুজনের ক্ষেত্রে সফলতা পাওয়ার সফরটি হয় অত্যন্ত কঠিন এবং চ্যালেঞ্জে ভরা। যদিও, সমস্ত বাধাকে উপেক্ষা করেই লক্ষ্যপূরণের দিকে এগিয়ে যান তাঁরা। আর এইভাবেই তারা গড়ে তোলেন অনন্য উত্তরণের কাহিনি (Success Story)। বর্তমান প্রতিবেদনেও আজ আমরা ঠিক সেইরকমই এক লড়াকু ব্যক্তির প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যিনি একাধিক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েও আজ IAS অফিসার (IAS Officer) হয়ে নজির গড়েছেন।

মূলত আজ আমরা আপনাদের কাছে কে এলামভবতের বিষয় জানাবো। যিনি তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলার একটি ছোট গ্রাম চোলাগানাগুদিক্কাদুতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর সাফল্যের জন্য দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে সংগ্রাম করেছেন। একটা সময়ে তাঁর মনে হয়েছিল যে, স্বপ্নপূরণ হয়তো হবে না। কিন্তু ভেঙে না পড়ে নিজের অদম্য পরিশ্রম দিয়ে, IAS (Indian Administrative Service) অফিসার হয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, যাঁরা সঠিক পরিশ্রম করেন তাঁরা কখনোই হেরে যান না।

Success Story of IAS K Elambahavath

বাবার মৃত্যুর পর ছাড়তে হয় স্কুল: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এলামভবতের বাবা গ্রাম প্রশাসনিক আধিকারিক ছিলেন এবং মা ছিলেন একজন সমাজকর্মী। উল্লেখ্য যে, তাঁর বাবা ছিলেন গ্রামের প্রথম স্নাতক। এমতাবস্থায়, এলামভবতের শৈশব আর পাঁচজনের মতোই অতিবাহিত হলেও এলামভবতের বাবার মৃত্যুর পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। ১৯৯৭ সালে বাবার মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও পড়ে। এমনকি, পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে যায় যে, এলামভবতকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা ছেড়ে মায়ের সাথে মাঠে কাজ করতে যেতে হয়। যদিও, এলামভবত শিক্ষার গুরুত্ব জানতেন। এই কারণেই তিনি কোনো না কোনো ব্যবস্থা করে পড়াশোনা চালিয়ে যান। মাদ্রাজ ইউনিভার্সিটি থেকে ইতিহাসে স্নাতক করার পর দেরি না করে তিনি সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।

আরও পড়ুন: কাঁপুনি ধরাচ্ছে শীত! তার মাঝেই বঙ্গে বৃষ্টির আশঙ্কা, ভাসতে চলেছে এই জেলাগুলি

যদিও, দুঃখের বিষয়, বহু চেষ্টা করেও তিনি চাকরি পাচ্ছিলেন না। এদিকে, তাঁর বয়সও দ্রুত বাড়ছিল। পাশাপাশি, এলামভবত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, তিনি IAS অফিসার হবেন। যেহেতু তাঁর কাছে অর্থের জোগান ছিলনা তাই তিনি পাবলিক লাইব্রেরিতে পড়াশোনা শুরু করেন এবং সম্পূর্ণ নিজেই পড়াশোনা চালিয়ে যান। তারপরে তিনি তামিলনাড়ু পাবলিক সার্ভিস কমিশনের একাধিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু IAS হওয়ার স্বপ্ন তিনি হারাননি। শেষে রাজ্য সরকার গ্রুপ -১ সার্ভিসে জয়েন করার পরেও, তিনি তাঁর প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন।

আরও পড়ুন: এবার বড় নোটিশের সম্মুখীন LIC! দিতে হবে বিপুল অঙ্কের জরিমানা, চিন্তায় ঘুম উড়ল গ্রাহকদের

IAS-এর পরীক্ষায় মেইনসে ৫ বার এবং ইন্টারভিউ রাউন্ডে ৩ বার ব্যর্থ হওয়ার পরেও আশা হারাননি তিনি। এদিকে, ২০১৪ সালে, কেন্দ্রীয় নীতি অনুযায়ী তিনি আরও দু’টি প্রচেষ্টার সুযোগ পান। আর সেখানেই আসে সাফল্য। ২০১৫ সালে তিনি IAS-এর জন্য তাঁর শেষ চেষ্টা করেছিলেন এবং তাতেই সফল হন। তিনি IAS-এ সর্বভারতীয় ১১৭ তম স্থান পেয়েছিলেন। আজ তিনি দেশের একজন সুপরিচিত সরকারি আধিকারিক। পাশাপাশি, দেশের যুবসমাজের কাছেও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন এলামভবত।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর