বাংলা হান্ট ডেস্ক: অল্প বিনিয়োগের (Investment) মাধ্যমে সঠিকভাবে ব্যবসা (Business) করার মাধ্যমেও যে কোটিপতি হওয়া যায় সেটাই আরও একবার প্রমাণ করে দেখালেন এক ইঞ্জিনিয়ার দম্পতি। এমতাবস্থায়, তাঁদের সফলতার কাহিনি (Success Story) উদ্বুদ্ধ করবে বাকিদেরকেও। সন্দীপ যোগীপার্তি একসময় আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেটা ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। যদিও, তিনি সবসময় হায়দ্রাবাদে ফিরে আসতে চাইতেন। পাশাপাশি, সন্দীপ অন্যরকম কিছু করতে চাইতেন।
তাঁর স্ত্রী কবিতা গোপুও তাঁকে এই বিষয়ে সমর্থন করেন। কবিতাও একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। আমেরিকায় পাঁচ বছরেরও বেশি সময় কাটিয়ে দু’জনেই তাঁরা তাঁদের স্বপ্নপূরণ করতে ভারতে আসেন। এখানে ফিরে ওই দম্পতি মাত্র ১ লক্ষ টাকার পুঁজি নিয়ে একটি স্টার্টআপ শুরু করেন। আজ তা রূপান্তরিত হয়েছে ২ কোটি টাকায়। এই স্টার্টআপ স্বাস্থ্যকর লাড্ডু সম্পর্কিত। যেটির নাম- লাড্ডু বক্স।
কিভাবে মাথায় এলো পরিকল্পনা: ওই দম্পতি ২০১৯ সালে হায়দ্রাবাদে ফিরে আসেন। তারপর সন্দীপ বিভিন্ন ধরণের ব্যবসার সুযোগ খুঁজতে শুরু করেন। বাজারের চাহিদা বুঝতে ৬ থেকে ৮ মাস দেশজুড়ে ঘুরেছেন তিনি। তারপরেই তিনি বুঝতে পারেন ফুড এবং ফিটনেস সেগমেন্টে ভালো সুযোগ রয়েছে। এরপরেই তিনি স্বাস্থ্যকর মিষ্টির বিষয়ে মনোযোগ দেন। উল্লেখ্য যে, বাজারে বিভিন্ন ধরণের এনার্জি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ পণ্য রয়েছে। কিন্তু, সেগুলিতে এমন অনেক উপাদান রয়েছে যা গ্রাহকদের পক্ষে বোঝা কঠিন। এই বিষয়টিই সমাধান করতে চান তিনি।
আরও পড়ুন: LIC-র নয়া নজির! প্রথমবারের মতো বিরাট কারনামা করল বিমা সংস্থা, হল ৩৫ হাজার কোটির ফায়দা
প্যাকেটজাত মিষ্টির বিরাট বাজার: মার্কেট রিচার্স ফার্ম IMARC গ্রুপের মতে, ভারতীয় প্যাকেটজাত মিষ্টির বাজার ২০২৩ সালে ৬,২২৯.৭ কোটি টাকা মূল্যের ছিল। যা ২০৩২ সালের মধ্যে ২৫,৯৭০.৮ কোটি টাকায় পৌঁছবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সন্দীপ ও কবিতা এই পরিসংখ্যানের বিষয়টি মাথায় রেখেছিলেন। ধীরে ধীরে ওই দম্পতি লাড্ডুর ঐতিহ্যবাহী রেসিপি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। যেহেতু তাঁদের লক্ষ্য ছিল চিনির পরিবর্তে একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প সরবরাহ করা, এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা আখের গুড়ের বিকল্প বেছে নেন। একদম প্রথম দিকে তাঁরা বিভিন্ন মেলা ও আইটি কোম্পানিতে স্টল বসিয়ে নিজেদের হাতে তৈরি মিষ্টির মার্কেটিং করতেন। তারপরে গ্রাহকদের কাছ থেকে তাঁরা কল পেতে শুরু করেন। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই ব্যবসায় তাঁদের প্রাথমিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ লক্ষ টাকা।
আরও পড়ুন: যাত্রীদের জন্য বড় পদক্ষেপ! বাড়ানো হচ্ছে ট্রেনের স্টপেজ এবং কোচ, ঘোষণা পূর্ব রেলের
লাড্ডুর ১৫ টি ভেরিয়েন্ট: জানিয়ে রাখি যে, লাড্ডু বক্স ২০২০ সালের মে মাসে চালু হয়েছিল। যদিও, তার ঠিক কয়েক মাসের মধ্যেই করোনার মতো ভয়াবহ মহামারীর উদ্রেক ঘটে। এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই মহামারীর মধ্যে একটি স্টার্টআপকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। এমনকি, কিছু সময়ের জন্য তাঁরা কাজ বন্ধও করে দেন। এদিকে, করোনার পরে স্বাস্থ্যকর খাবারের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। যার ফলে লাভবন হয় লাড্ডু বক্স। চারটি পণ্য দিয়ে সফর শুরু করে, লাড্ডু বক্স এখন ১৫ টি লাড্ডুর ভেরিয়েন্ট উপলব্ধ করে। আর এইভাবেই ১ লক্ষ টাকার মূলধন দিয়ে শুরু হওয়া এই ব্যবসাটি দ্রুত ২ কোটি টাকার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।