বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে স্বাতী ভার্গব (Swati Bhargava) হলেন দেশের অন্যতম সফল মহিলা উদ্যোক্তা (Entrepreneur)। স্বাতী তাঁর দুর্দান্ত কর্পোরেট কেরিয়ারের পর, তিনি এবং তাঁর স্বামী রোহন ভারতের বৃহত্তম ক্যাশব্যাক পোর্টাল Cashkaro-র চালু করেন। ২০১৬ সালে রতন টাটা এই কোম্পানিতে অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। ইতিমধ্যেই কোম্পানির গ্রস মার্চেন্ডাইজ ভ্যালু (GMV) গত বছর ৪,০০০ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, গ্রস মার্চেন্ডাইজ ভ্যালু হল একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিক্রি হওয়া পণ্যের মোট মূল্য। মূলত, CashKaro ই-কমার্স পোর্টালের গ্রাহকদের তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ক্যাশব্যাকের সুবিধা প্রদান করে। পাশাপাশি, তারা গিফট ভাউচারের সুবিধাও উপলব্ধ করে। গত বছর, সংস্থাটি ২২৫ কোটি টাকার রেভিনিউ অর্জন করেছিল।
দশম শ্রেণিতে হরিয়াণার টপার ছিলেন স্বাতী: উল্লেখ্য যে, স্বাতী ভার্গব হলেন আম্বালার বাসিন্দা। দশম শ্রেণিতে তিনি হরিয়াণার টপার হয়েছিলেন। তিনি একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা শেষ করার জন্য স্কলারশিপ নিয়ে সিঙ্গাপুরে যান। এমনকি, স্বাতী দশম শ্রেণির পরীক্ষায় গণিতে ১০০ পেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে অর্থনীতি এবং গণিত নিয়ে স্নাতক হন।
UK থেকে নিয়ে আসেন আইডিয়া: স্বাতী ২০০৫ এবং ২০১০-এর মধ্যে গোল্ডম্যান শ্যাক্সের জন্য কাজ করেছিলেন। এরপরে তিনি নিজে ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। ২০০৯ সালে, তিনি রোহন নামে একজন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কারকে বিয়ে করেন। এমতাবস্থায়, যখন তাঁরা তাঁদের হানিমুনের পরিকল্পনা করছিলেন তখন তাঁরা একটি ক্যাশব্যাক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে UK-তে তাঁদের ফ্লাইট বুক করছিলেন। সেখানে অনেকটা টাকা বেঁচে যায় তাঁদের। সেখান থেকেই নিজের স্টার্টআপের ধারণা পেয়ে যান তিনি। স্বাতী UK-তে পোরিং পাউন্ডস নামে একটি ক্যাশব্যাক ওয়েবসাইট তৈরি করেন।
Cashkaro তৈরি হয় ২০১৩ সালে: মূলত, ১৭ জন কর্মচারী এবং ইন্টার্ন নিয়ে ২০১৩ সালে ভারতে ওই একই রকম একটি কোম্পানি চালু করেছিলেন তিনি। যেটির নাম দেওয়া হয় Cashkaro। ২০১৪ সালে, স্বাতী অর্থ সংগ্রহ করার আশায় লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স থেকে তাঁর সিনিয়র এবং বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই, তাঁরা তাঁদের নির্ধারিত অর্থের দ্বিগুণ অর্থ পেয়ে যান। শুধু তাই নয়, ২০১৫ সালে কালারি ক্যাপিটাল থেকে তাঁরা ২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিলেন।
বিনিয়োগ করেছেন টাটাও: স্বাতী এবং রোহনের দুর্দান্ত বোঝাপড়া এবং কঠোর পরিশ্রমের কারণে Cashkaro দেশে জনপ্রিয় হতে শুরু করে। এদিকে, ২০১৬ সালে রতন টাটা এই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন। মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে টাটার সাথে দেখা হয় তাঁদের। যেখানে টাটা জানিয়েছিলেন, “যে দেশে সবাই টাকা বাঁচাতে পছন্দ করে, সেখানে আপনারা বিনামূল্যে টাকা দিচ্ছেন।”
সহজ ব্যবসায়িক মডেল: CashKaro-র একটি সহজ ব্যবসায়িক মডেল রয়েছে। তারা তাদের রিটেল পার্টনারদের কাছ থেকে ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন পায়। এমতাবস্থায়, তারা তাদের গ্রাহকদের কাছে এই সুবিধাটি প্রেরণ করে। এতে উভয়পক্ষই লাভবান হয়।
CashKaro ১৮ মিলিয়নেরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে: এই প্রসঙ্গে স্বাতী ভার্গব তাঁর লিঙ্কডইন প্রোফাইলে লিখেছেন, “CashKaro ১৮ মিলিয়নেরও বেশি ডাউনলোড হয়েছে। এটি একমাত্র VC-সাপোর্টেড ক্যাশব্যাক সাইট যা কালারি ক্যাপিটালের নেতৃত্বে সিরিজ এ ফান্ডিং এবং কোরিয়া ইনভেস্টমেন্ট পার্টনারদের নেতৃত্বে সিরিজ বি ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে ১৫ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে। এটির বার্ষিক সেলস ৫০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। আমরা টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটার কাছ থেকেও বিনিয়োগ পেয়েছি।”