বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রত্যেকের সফলতার পেছনেই এক অদম্য লড়াইয়ের কাহিনি থাকে। যে কাহিনি অনুপ্রাণিত করে বাকিদের। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্ৰতিবেদনে আমরা ঠিক সেইরকমই এক সফল ব্যক্তির প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। মূলত, কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের (Kotak Mahindra Bank) ভাইস চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর উদয় কোটাক (Uday Kotak) ছোটবেলায় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কিন্তু, চোটের কারণে ক্রিকেটার হতে না পারলেও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সফলতার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি।
একসময় তুলো ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকলেও উদয় কখনোই তাঁর এই পারিবারিক ব্যবসাকে খুব একটা পছন্দ করতেন না। তাই, পরিবার থেকে দূরে থাকতে শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি, বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা ধার নিয়ে একটি ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি শুরু করেন উদয়। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ফোর্বসের ধনী ব্যক্তিদের তালিকা অনুসারে, বর্তমানে তিনি ভারতের দশম শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। তাঁর মোট সম্পদের পরিমান হল ১.১৫ লক্ষ কোটি টাকা (১৪.৮০ বিলিয়ন ডলার)। সর্বোপরি, তিনিই ভারতের সবথেকে ধনী ব্যাঙ্কার।
উদয় কোটাক জন্মগ্রহণ করেন মুম্বাইতে। তিনি মুম্বাইয়ের সিডেনহাম কলেজ থেকে কমার্সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর জামনালাল বাজাজ ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ থেকে এমবিএ করেন তিনি। পড়াশোনা শেষ করে উদয় তাঁর পারবারিক তুলো ব্যবসায় যোগ দেন। কিন্তু, পারিবারিক ব্যবসায় তাঁর মন বসছিল না। এমতাবস্থায়, উদয় ১৯৮৫ সালে পরিবার এবং বন্ধুদের কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে একটি ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি খোলেন। পরে তিনি মাহিন্দ্রা গ্রুপের সাথে অংশীদারিত্ব করেন এবং এই কোম্পানির নাম হয় কোটাক মাহিন্দ্রা ফাইন্যান্স। পরবর্তীকালে উদয় কোটাক ধীরে ধীরে স্টক ব্রোকিং, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কিং, বীমা, মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রেও তাঁর পোর্টফোলিও প্রসারিত করেন।
ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স পান ২০০৩ সালে: উদয় ২০০৩ সালে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স পান এবং এইভাবেই কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক শুরু হয়। আজ কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক ভারতের প্রধান বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে বিবেচিত হয়। পাশাপাশি কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের বাজার মূলধন ৩.৭৮ লক্ষ কোটি টাকা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক করোনার মতো ভয়াবহ মহামারীর সময়েও যথেষ্ট ভালো ফলাফল অর্জন করেছে। মূলত, উদয় কোটাক কখনও ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে ঋণ দেননি। আর এই কারণেই সঙ্কটের সময়েও ব্যাঙ্কের কার্যক্ষমতা ভালো ছিল।
প্রথম দেখাতেই হয় প্রেম: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, উদয় কোটাকের বিয়ে হয় পল্লবী কোটাকের সঙ্গে। ১৯৮৫ সালে উদয়ের সঙ্গে পল্লবীর দেখা হয়। প্রথমবার দেখা হওয়ার দুই মাস পরই উদয় পল্লবীকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাঁদের দুই ছেলে রয়েছে। উদয়ের বড় ছেলে জয় কোটাক হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে স্নাতক হয়েছেন এবং ২০১৭ সাল থেকে কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কে কাজ করছেন।