বাংলাহান্ট ডেস্ক : মর্মান্তিক দুর্ঘটনা মালবাজারে (Malbazar)। সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জন করতে গিয়ে মাল নদীতে আচমকা হড়পা বানে ভেসে যান বহু মানুষ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এখনও বেশ কয়েক জন নিখোঁজ বলে জানা যাচ্ছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানালেন, হঠাৎ হড়পা বান আসার ফলে অনেকেই স্রোতে ভেসে গিয়েছেন। কেউ বলছেন ২০, কেউবা বলছেন ২৫। কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না। চোখের সামনে ঘটে গেল ঘটনাটা। কয়েকজনকে মালবাজার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নদীর জল ক্রমশ বাড়ছে। আপাতত বিসর্জন বন্ধ রাখা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, মাল নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ঘাট তৈরি ছিল। মোতায়েন ছিল নিরাপত্তা সরঞ্জাম। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী বুলু চিকবরাইক, চেয়ারম্য়ান সহ অনেকেই। আচমকাই প্রবল বেগে ছুটে আসে হড়পা বান। তাতেই ভেসে যান নদীতে নামা বহু মানুষ। সাবধান হওয়ার কোনও সুযোগই তাঁরা পাননি। নদীগর্ভে বেশ কয়েকটি গাড়িও ছিল। সবকিছুই জলের তোড়ে ভেসে যায়। নদীতে বিসর্জনের জন্য যেসব ট্রাক নেমেছিল জলের তোড় সেইসব ট্রাকের উপর দিয়ে চলে যায়। ফলে ট্রাকে থাকা মানুষজন ভেসে যান। মাল নদীতে এরকম হড়পা বান নতুন কিছু নয়। কিছুদিন আগেই এরকম এক হড়পা বানে ভেসে গিয়েছিল একটি আস্ত ট্রাক। ঘটনার খবর পেয়েই উদ্ধারে নেমে পড়ে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। কিন্তু ততক্ষণে বহু মানুষ ভেসে গিয়েছেন। ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা।
পুলিস সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নতুন করে উদ্ধারকাজ শুরু হয়নি। সকাল থেকেই মালবাজারে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। যার জেরে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় ১৬ জনকে মালবাজারের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে মহিলা ছিলেন আট জন।
স্থানীয়দের অধিবাসীদের অভিযোগ, নদীর গতিপথ বদলানো হয়েছে। প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে নদীর মাঝামাঝি এলাকায় যেতে হয়েছিল দর্শনার্থীদের। হঠাৎই জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বিসর্জনের সময় ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল ছিল না বলেও অভিযোগ করেন এলাকার মানুষ।
এর উপর আবার মালবাজার হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে বুধবার রাতে মারাত্মক উত্তেজনা ছড়ায়। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। এই বিপর্যয় প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেছেন, ‘রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ হড়পা বান নেমেছিল। তার জেরে কয়েক জন ভেসে যান। কয়েক জন নদীর মাঝে একটা চরে আশ্রয় নেন। যাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁদের সকলকে উদ্ধার করা হয়েছে।’