বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সুহাস এল ওয়াই মানুষের অদম্য ইচ্ছা শক্তির এক জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত। কথায় আছে ইচ্ছাশক্তি থাকলে যেকোনো কঠিন সংঘর্ষই জিতে নেওয়া যায়, তারই এক উজ্জ্বল উদাহরণ সুহাস। তিনিই ভারতের প্রথম আইএএস অফিসার যিনি এবার টোকিও প্যারা অলিম্পিকে ভারতের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে নামবেন। জন্ম থেকেই একটি পায়ে সমস্যা ছিল তার। যার জেরে ছোট থেকেই ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের শিকার হতেন এই প্যারালিম্পিয়ান। কিন্তু শারীরিক সমস্ত সমস্যা সত্ত্বেও ব্যাডমিন্টনকেই প্রধান আকর্ষণ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
সুহাসের সাথে সর্বদাই ছিলেন তার পরিবার, সমস্ত ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ সত্বেও তাকে সমানে উৎসাহ দিয়ে যেতেন তারা। কিন্তু ২০০৫ সালে বাবার মৃত্যুর পর কার্যত বদলে যায় তার জীবন। তিনি ঠিক করেন আইএএস অফিসার হতেই হবে তাকে। যেমন ভাবা ঠিক তেমনি কাজ। যিনি আগে জীবনে খেলা ছাড়া কিছুই ভাবতে পারতেন না, তিনি ২০০৭ সালে পাস করেন ভারতের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা আইএএস। প্রথম পোস্টিং হয় আগ্রায়। এখান থেকে পরবর্তীতে হাথরাস, জনপুর হয়ে আপাতত গৌতম বুদ্ধ নগরের ডিএম তিনি।
প্রথম প্রথম অফিসের ক্লান্তি দূর করতেই ফের একবার ব্যাডমিন্টন হাতে তুলে নিয়েছিলেন সুহাস। কিন্তু তারপর বেশকিছু প্রতিযোগিতায় পদক জয়ের পর ধীরে ধীরে পেশাদারী ভাবে খেলাকে বেছে নেন তিনি। আপাতত তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা শার্টলার। সুহাস জানান, ২০১৬ সালে প্রথম চীনে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে যান তিনি। কিন্তু সেখানে প্রথম ম্যাচেই হার হয় তার, আর তার পরেই তিনি বুঝতে পারেন ম্যাচ জিততে হলে কতটা পরিশ্রম করতে হবে তাকে। তারপর থেকে কার্যত জয়যাত্রা শুরু। এবার টোকিওতে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন তিনি।
বলাই যায় নিজের ভাগ্য নিজের হাতেই লিখেছেন সুহাস। এক সময় তিনি পাস করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং, ২০০৫ সালে বাবার মৃত্যুর পর তিনি চলে আসেন আইএএস পরীক্ষা দিতে। সফলতার সাথে সেই পরীক্ষায় পাশ করার পর ফের একবার বেছে নেন ছোটবেলার প্রেম ব্যাডমিন্টনকে। আর আজ সেখানেও তিনি সফল। আজ থেকে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক প্যারালিম্পিকস। টোকিওতে ভারতের সফর শুরু হবে ২৭ তারিখ। সুহাস জানিয়েছেন দিনের পর দিন কাজের পর রাতেরবেলা প্র্যাকটিস করে নিজেকে তৈরি করেছেন তিনি, শুধু আজকের দিনটা দেখার জন্য। নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতে প্রস্তুত এই আইএএস অফিসার। তবে এখনও তিনি বলেন তাঁর প্রথম লক্ষ্য দেশসেবা।