বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রায় সারা বছরই আমাদের দেশে লটারির ব্যাপক চাহিদা থাকে। এবার এই লটারি টিকিট নিয়েই বড় সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। তাই লটারি কেনার আগে অবিলম্বে জেনে নিন এই নতুন আপডেট। আদালতের নির্দেশের পর এবার থেকে বিরাট সুবিধা পেতে চলেছেন লটারি ডিস্ট্রিবিউটররা। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে লটারির টিকিট বিক্রি, লটারির প্রচারের উপর এবার থেকে আর কোনো সার্ভিস ট্যাক্স বসাতে পারবে না কেন্দ্র এবং অধীনস্থ রাজস্ব বিভাগ।
লটারি টিকিট নিয়েই বড় সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)
শীর্ষ আদালতের (Supreme Court) নির্দেশ অনুযায়ী এবার থেকে লটারি টিকিটের উপর কর আরোপ করার অধিকার থাকবে শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের। সিকিম হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেই এবার এই মর্মে রায় দিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এই নিয়ে কেন্দ্র ও রাজস্ব বিভাগের পক্ষ থেকে পাঠানো অভিযোগ পত্র সম্পূর্ণ নাকচ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি লটারি ডিস্ট্রিবিউটরদের কেন্দ্রকে আর কোন সার্ভিস ট্যাক্স দিতে হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার অর্থাৎ গত ১১ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) একটি বড় রায়ে, একথা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে লটারির উপর আর কর আরোপের অধিকার থাকবে না কেন্দ্রের। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং সতীশ চন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। মামলা চলাকালীন দুই বিচারপতির বেঞ্চ লটারি বিক্রিকারীদের উপর পরিষেবা কর আরোপের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচেষ্টাকে অসংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছে। আরও স্পষ্ট করে আদালত জানিয়েছে যে সংবিধানের রাজ্য তালিকার এন্ট্রি ৬২-র অধীনে ‘বাজি এবং জুয়া’ হিসেবে লটারি রাজ্যগুলির আওতায় পড়ে।
কি যুক্তি ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের?
আদালতের (Supreme Court) এই নির্দেশ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তি দিয়েছিল যে লটারির বিতরণ এবং বিপণনের সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলির ওপর পরিষেবা কর আরোপ করা উচিত। সরকার অর্থ আইনের অধীনে এটিকে পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করে করযোগ্য ঘোষণা করার যুক্তি দিয়েছিল তারা। যদিও সুপ্রিম কোর্টে সেই যুক্তি পুরোপুরি খারিজ করে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার এবং লটারির বিতরণকারীদের মধ্যে সম্পর্ক প্রিন্সিপাল থেকে প্রিন্সিপাল। প্রিন্সিপাল থেকে এজেন্ট নয়। তাই এর উপর পরিষেবা কর আরোপ করা যাবে না।
প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় সরকার এর আগেও অর্থাৎ ১৯৯৪, ২০১০ এবং ২০১৫ সালে অর্থ আইন সংশোধন করে লটারি সম্পর্কিত কার্যক্রমকে করের আওত্তায় আনার চেষ্টা করেছিল। এই সংশোধনীর অধীনে লটারি বিতরণকে ব্যবসায়িক সহায়ক পরিষেবা হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। অন্যদিকে ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে সিকিম হাইকোর্টে সংশোধনী গুলিকে অসংবিধানিক বলে ঘোষণা করে। সুপ্রিম কোর্ট-ও (Supreme Court) হাইকোর্টের সেই সিদ্ধান্ত বহাল রেখে কেন্দ্রীয় সরকারের আপিল খারিজ করে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত ফিউচার গেমিং এন্ড হোটেল সার্ভিসেস এবং সামিট অনলাইন ট্রেড সলিউশনের মত কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়ের করা আপিলের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি মামলা প্রসঙ্গে এই রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই কোম্পানিগুলি আগেই হাইকোর্ট থেকে স্বস্তি পেয়েছিল। এবার সুপ্রিম কোর্টও হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বহাল রাখল।
আরও পড়ুন: মহাকুম্ভে যাওয়ার জন্য তুমুল হুড়োহুড়ি! দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ১৫ জনের, শোকপ্রকাশ মোদির
অন্যদিকে লটারি টিকিটের বিষয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন অবস্থান রয়েছে। কেরল সিকিম নাগাল্যান্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্য লটারির অনুমতি দেয় এবং এর থেকে রাজস্ব আয় করে। অন্যদিকে গুজরাট,উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের মতো রাজ্যগুলি লটারি বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে।
বাজি এবং জুয়া সংবিধানের রাজ্য তালিকার এন্ট্রি ৩৪এর অধীনে সম্পূর্ণরূপে রাজ্যগুলির এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে .অতএব কোনো রাজ্য লটারি অনুমোদন করবে কিনা সেইসিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তাদের। এখানে বলে রাখা ভালো সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে লটারি টিকিটের ওপর কর আরোপ করার একমাত্র অধিকার শুধু রাজ্য সরকারের থাকবে।